১১:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

রাজশাহীতে কাকনহাট পৌরসভায় নাবীল গ্রুপের মুরগির খামারের বর্জ্যে অতিষ্ঠ গড়গড়া গ্রামের মানুষ

মোঃ নাসির উদ্দিন
  • Update Time : ০৩:১০:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১৫৮ Time View

মোঃ নাসির উদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধি :রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাটএ গড়গড়া গ্রামে নাবীল গ্রুপের মুরগির খামারের বর্জ্য ফেলার কারণে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি হয়েছে। খামার থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে মুরগির বিষাক্ত মল-মূত্র ও অন্যান্য বর্জ্য কোনো ধরনের প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াই গ্রামের প্রধান পানির খাড়িতে ফেলা হচ্ছে। ফলে পানির খাড়ির রঙ ও গন্ধ ভয়াবহভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং চারপাশের পরিবেশ হয়ে উঠেছে শ্বাসরুদ্ধকর।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, খাড়ির পানিতে ফেলা বর্জ্যের কারণে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ির জানালা-দরজা বন্ধ রেখেও দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। অনেকে ইতোমধ্যে শ্বাসকষ্ট, ত্বকের রোগ এবং পেটের পীড়ার মতো নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।

জানা গেছে, পূর্বে এসব বিষাক্ত বর্জ্য রাজশাহীর বাইরে ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে উপশহরের রানা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চৌডালার নাঈম, দামকুরার গাফফার, কাকনের রায়হান ও জামাল পরিবহন খরচ বাঁচাতে রাত্রি ১টা থেকে ৩টার মধ্যে গ্রামের আশপাশে সুবিধামতো স্থানে বর্জ্য ফেলে দিচ্ছেন। ফলে সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মুরগির খামার কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা পাওয়া যায়নি। তারা বরং অভিযোগ উপেক্ষা করে আগের মতোই বর্জ্য ফেলা অব্যাহত রেখেছে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, মুরগির বর্জ্যে উচ্চমাত্রার অ্যামোনিয়া ও নাইট্রেট থাকায় এটি শুধু জলজ প্রাণী ও কৃষিজমির ক্ষতি করছে না, বরং বাতাসে দূষিত গ্যাস ছড়িয়ে মানবদেহে ক্যান্সার, হাঁপানি এবং অন্যান্য জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে:

অবিলম্বে খামার থেকে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করা,

খামারে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি (ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট সিস্টেম) চালু করা,

প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা,

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করা।

এ বিষয়ে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়রা সতর্ক করেছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

3 thoughts on “রাজশাহীতে কাকনহাট পৌরসভায় নাবীল গ্রুপের মুরগির খামারের বর্জ্যে অতিষ্ঠ গড়গড়া গ্রামের মানুষ

  1. Защищая свои границы, вы создаете пространство для внутренней
    тишины, которая дарит ясность
    мышления и открывает путь
    к глубокому самопознанию, недоступному в постоянной суете и удовлетворении чужих ожиданий.

    Видео. Личные границы. Забота о себе.

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

রাজশাহীতে কাকনহাট পৌরসভায় নাবীল গ্রুপের মুরগির খামারের বর্জ্যে অতিষ্ঠ গড়গড়া গ্রামের মানুষ

Update Time : ০৩:১০:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

মোঃ নাসির উদ্দিন, বিশেষ প্রতিনিধি :রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাটএ গড়গড়া গ্রামে নাবীল গ্রুপের মুরগির খামারের বর্জ্য ফেলার কারণে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি হয়েছে। খামার থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে মুরগির বিষাক্ত মল-মূত্র ও অন্যান্য বর্জ্য কোনো ধরনের প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াই গ্রামের প্রধান পানির খাড়িতে ফেলা হচ্ছে। ফলে পানির খাড়ির রঙ ও গন্ধ ভয়াবহভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং চারপাশের পরিবেশ হয়ে উঠেছে শ্বাসরুদ্ধকর।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, খাড়ির পানিতে ফেলা বর্জ্যের কারণে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ির জানালা-দরজা বন্ধ রেখেও দুর্গন্ধ থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। অনেকে ইতোমধ্যে শ্বাসকষ্ট, ত্বকের রোগ এবং পেটের পীড়ার মতো নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।

জানা গেছে, পূর্বে এসব বিষাক্ত বর্জ্য রাজশাহীর বাইরে ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে উপশহরের রানা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চৌডালার নাঈম, দামকুরার গাফফার, কাকনের রায়হান ও জামাল পরিবহন খরচ বাঁচাতে রাত্রি ১টা থেকে ৩টার মধ্যে গ্রামের আশপাশে সুবিধামতো স্থানে বর্জ্য ফেলে দিচ্ছেন। ফলে সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মুরগির খামার কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা পাওয়া যায়নি। তারা বরং অভিযোগ উপেক্ষা করে আগের মতোই বর্জ্য ফেলা অব্যাহত রেখেছে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, মুরগির বর্জ্যে উচ্চমাত্রার অ্যামোনিয়া ও নাইট্রেট থাকায় এটি শুধু জলজ প্রাণী ও কৃষিজমির ক্ষতি করছে না, বরং বাতাসে দূষিত গ্যাস ছড়িয়ে মানবদেহে ক্যান্সার, হাঁপানি এবং অন্যান্য জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে:

অবিলম্বে খামার থেকে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করা,

খামারে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি (ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট সিস্টেম) চালু করা,

প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা,

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করা।

এ বিষয়ে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়রা সতর্ক করেছেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।