বাংলাদেশ: বিশ্বের সবচেয়ে বড় খোঁয়াড় বা জেলখানা

- Update Time : ০৩:৪৪:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
- / ২৪৬ Time View
ফেসবুক: https://www.facebook.com/BangladeshNezameislamparty
ইউটিউব:www.youtube.com/@bangladeshnezameislamparty
ফিরোজ মাহবুব কামাল : যখন কোন জায়গার চারপাশে দেয়াল বা কাঁটা তারের বেড়া দেয়া হয়, তখন সে জায়গাটি একটি নতুন পরিচয় চায়। সেটি গরু ছাগলের খোঁয়াড় অথবা জেলখানার। কারণ খোঁয়াড় বা জেলখানার চার পাশেই উঁচু দেয়াল বা কাঁটাতারের বেড়া থাকে। বাংলাদেশের চারপাশে সেরূপ বেড়া দিয়েছে ভারত। ইউরোপে ৫০টি দেশের পাশাপাশি অবস্থান। দেশগুলির মাঝে কাঁটাতারের বেড়া নাই। দক্ষিণ আমেরিকায় ১২টি সার্বভৌম রাষ্ট্র; সেখানেও কাঁটাতারের বেড়া নাই। আরব বিশ্বে ২২টি রাষ্ট্র; সেখানেও নাই কোন কাঁটা তারের বেড়া। কারণ, সভ্য মানুষেরা কখনোই প্রতিবেশীকে চোর ডাকাত ও গরু ছাগল ভাবে না। ফলে তাদের থেকে বাঁচতে কাঁটা তারের বেড়া দেয়না। প্রশ্ন হলো, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী শাসকচক্রের মানসিকতা বুঝার জন্য কি কোন গবেষণার প্রয়োজন আছে? কাঁটা তারের এ বেড়াই কি যথেষ্ট নয়?
২১ বছরের পাকিস্তানী আমলে ভারত এরূপ বেড়া পূর্ব পাকিস্তান ঘিরে দেয়নি। এ দেয়াল একান্তই ১৯৭১’য়ের অর্জন। ফলে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় খোঁয়াড় বা জেলখানায়। এ খোঁয়াড় বা জেলখানায় ১৮ কোটি মনুষ্য প্রাণীর বসবাস। ভারত পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ইসরাইলে। ইসরাইলও একই ভাবে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে গাজা ও ফিলিস্তিনের অন্যান্য অংশকে ঘিরে। ফিলিস্তিনকে পরিণত করেছে জেলখানায়। আরব মুসলিমদের সাথে ইসরাইলে যেরূপ আচরণ, ভারতেরও সেরূপ আচরণ বাংলাদেশীদের সাথে। বিস্ময়ের বিষয় হলো, এ ভারতীয়দেরকেই একাত্তরের চেতনাধারীরা অকৃত্রিম বন্ধ মনে করে!
জেলখানার বাসিন্দাদের কথাবলা, লেখালেখি ও মিটিং-মিছিলের স্বাধীনতা থাকে না। নির্বাচনে অংশ নেয়া ও ভোটদানের স্বাধীনতাও থাকে না। বাংলাদেশীদেরও সে স্বাধীনতা ছিল না মুজিব শেখ ও হাসিনা শেখের শাসনামলে। স্বাধীন ভাবে কথা বললে, লেখালেখি করলে বা মিটিং-মিছিল করলে নির্যাতিত হতে হতো এবং লাশ হতে হতো। এ ছিল একাত্তরে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবস্থা –যা নিয়ে একাত্তরের চেতনাধারীরা আবার উৎসবও করে!
কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ভারত বুঝাতে চায়, বাংলাদেশের জনগণ গরু ছাগল অথবা ডাকাত। তাই জেলখানাই তাদের জন্য বাসস্থান। বাংলাদেশীদের জন্য এরচেয়ে বড় অপমান আর কি হতে পারে? অথচ এ অবধি বাংলাদেশের কোন সরকারই ভারতের এ নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেনি। বরং ভারতের সাথে নতজানু সম্পর্ক রেখে চলেছে। কারণ মুজিব শেখ থেকে শুরু করে হাসিনা শেখ অবধি অতীতের সবগুলি সরকারই ছিল ১৯৭১’য়ের চেতনাধারী। একাত্তরের এ চেতনা ভারতের প্রতি অনুগত হতে শেখায়। এবং ভারতকে মনিব বলতে শেখায়। একাত্তরের এ চেতনার ফলে অধিকৃত হয়েছে বাঙালি মুসলিমের চেতনার মানচিত্র এবং অসম্ভব করেছে স্বাধীন ভাবে বেড়ে উঠা। তাই স্বাধীন ভারে বাঁচতে হলে দাফন করতে হবে একাত্তরের হিন্দুত্ববাদী ও বাঙালি ফ্যসিবাদী বয়ান। ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর ভারতসেবক স্তাবকশ্রেণী ভেগে যেত বাধ্য হয়েছে। এখন সময় এসেছে একাত্তরের হিন্দুত্ববাদী ও বাঙালি ফ্যসিবাদী চেতনামুক্ত নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের।
তবে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের আগে নতুন চেতনা নির্মাণ করতে হবে। সে চেতনা নির্মাণে ফিরে যেতে হবে রাষ্ট্র নির্মাণের ইসলামী বয়ানে। সে জন্য ফিরে যেত হবে মুসলিমদের নিজস্ব বয়ানে। সে কাজে অনুসরণ করতে হবে নবীজী (সা:)’র রাষ্ট্র নির্মাণের ভাবনা ও সূন্নত। সভ্য ও উন্নত রাষ্ট্র নির্মাণের জিহাদে নবীজী (সা:)’র সে সফল সূন্নত ছাড়া কি ভিন্ন পথ আছে? সেটি হোক আজকের বাঙালি মুসলিমদের রাজনৈতিক সাধনা। এ সাধনা আরব মুসলিমদের বিশ্বশক্তিতে পরিণত করেছিল। এ পথে চলে বাংলাদেশও পেতে বিশ্বের মঞ্চে সম্মানজনক আসন। এবং একমাত্র এ পথেই মুসলিমগণ প্রিয় হতে পারে তাদের সর্বশক্তিমান রব’য়ের কাছে।
—