প্রসঙ্গ – “তু মাকবুলবান মাশহুর নাবান ”

- Update Time : ১১:১৩:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
- / ২৭৮ Time View
যতটুকু জানি কোন যোগ্যব্যাক্তি কখনও যোগ্য বলে প্রকাশ করেন না- আমি যোগ্য। তবে জ্ঞানীরাই
যোগ্য। ভৈরবের পরে কালিকা প্রসাদে কান্দাইল্লা শাহ নামে এক পীরের আস্তানা ছিল। একজন সাব-
রেজিস্ট্রারের সাথে আমি ও আমার সহকর্মী মোসলেম ভাই গিয়েছিলাম সেই আস্তানায়। বলে রাখি,
আমি আবার এইসব পীর পাগলের বিশ্বাসী না। ওখানে গিয়ে দেখি পীর সাহেব নতুন আগত অতিথিদেরকে
অকথ্য ভাষায় গলাজ করছে। আমরা তিনজন তার কক্ষে ঢোকার পর সাব রেজিস্ট্রার ও মোসলেম ভাই
পীরের সাথে হাত মেলান। আমি তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকে মাপজোপ করছি। পীর তা অনুধাবন
করতে পেরেছ। কিছুক্ষন পর ঢাকা থেকে এক ধনী ভক্ত পীরের জন্য প্রায় ২ কেজি আলাউদ্দিনের
তৈরী মিষ্টি হাদিয়া প্রদান করেন। পীর সাহের তাকে গালিগলাজ করে মিষ্টির প্যাকেট খানা আমার
হাতে তুলে দিয়ে বলেন, “ তু মাকবুলবান মাশহুর নাবান ”। সবাই আমাকে দেখছে। আমি এর অর্থ জানি
না। পরে জানতে পারলাম এর অর্থ “তুমি ধনবান হও প্রকাশিত হইয়ো না। ” যতক্ষন আস্তানায় ছিলাম
ততক্ষন পীরের ভক্তরা আমাকে যথেষ্ট ইজ্জত করেছে। জানিনা কেন ? এক বিকেলে আমি বাদলভাই
ও তাহের প্রফেসার ও আরও অনেক পর্যটক আজমির শরীফের আয়না সাগরের শানবান্দা পাড়ে বসে
মাছ দেখছি হঠাৎ একটি বড় চিতলমাছ লাফ দিয়ে আমার পায়ের উপর পড়ল, ভয়ে ভয়ে আমি বললাম
যা জলে নেমে যা। মাছ পানিতে পড়ে গেল। সাথে সাথে কয়েকজন মহিলা ও পুরুষ পর্যটক আমার পা মুছে
মাথায় দূলি মাখছে ও আমার চরনে প্রনাম করছে। আসলে আমি খাওয়া আর ঘুমছাড়া কিছুই বুঝিনা। যা
ঘটছে সব ঝড়ে বক। এবার আসা যাক লেখার মূল প্রসঙ্গে। দেশে স্থানীয় নির্বাচন আসলে প্রার্থীরা
জন দরদী, গরীবের বন্ধু, সৎ নিবেদিত প্রাণ এসব লিখে এরপর কায়দা কৌশল করে মেম্বার,
চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে যায়। অনেকেই পড়া লেখার ঘাটতি থাকায় পুলিশের সিপাইকে স্যার বলে
সম্ভোদন করতে ভূল করে না। সে জানে না, সে একজন জনপ্রতিনিধি। অনেক শিক্ষিত বি এ পাশ লোক
সমাজে বিদ্যমান। কিন্তু তারা নব্য ধনী ও ক্ষমতাসীনদের দাপটের ভয়ে জনসেবায় আত্ম নিয়োগ
করতে পারে না। দেশে ভাল সৎ ও শিক্ষিত লোক আছে। কিন্তু তারা মিছিল করে না আমরা ভাল।
তাদেরকে খুজে বের করতে হবে। লোক মুখে শুনছি স্থানীয় নির্বচনে নাকি সংস্কার হবে। অন্তত বি এ
পাশ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ও এস এস সি পাশ ছাড়া মেম্বার পদে নির্বাচন করতে
পারবে না। যদি এটা সত্য হয় তাহলে দেশ থেকে সন্ত্রাস ,ঘুষ র্দূনীতি, খুন খারাপি ও এতিম ও
অসহায়দের ভূমিগ্রাস বন্ধ হয়ে যাবে। এতে কোন সন্দেহ নাই। হয়রানী মূলক মামলা মোকদ্দমা বন্ধে
বৈপ্লবিক অর্থনৈতিক উন্নতির অধ্যায় ঘটবে। শেখ হাসিনা চেয়েছিল ড. ইউনূসকে পদ্মা নদীতে
দুইবার চুবনি দিতে। বিএনপির নেতা ফজলুর রহমান কটাক্ষ করে বলেছে- নোবেল পেয়েছে বলে ড.
ইউনূস বড় মাপের কেউ হয়ে যায়নি। ড. ইউনূসের আমাদের চেয়েও কম বুঝে। জাতীয় পার্টির নেতা
জিএম কাদের বলেছে- ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আর
মির্জা ফখরুল তো নিয়ম করে তিনবেলা নির্বাচন চায় যাতে ক্ষমতা থেকে ড. ইউনূসকে দ্রুত সরানো
যায়।অথচ আজকে আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষণা হলো BIMSTEC এর পরবর্তী চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছে
আমাদের ড. ইউনূস স্যার। বিমসটেক গঠন করা হয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ায় বঙ্গোপসাগরীয় ব্যবসা-
বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নতির জন্যে। মায়ানমার, ভারতসহ মোট ৭ টা দেশ আছে এটাতে। এখন ড.
ইউনূস চেয়ারম্যান হওয়াতে বাংলাদেশ এটার লিডিং পজিশনে থাকবে, এমনকি আধিপত্য বিস্তার
করবে। আজকে সেই জায়গাটাই অর্জন করলেন ড. ইউনূস।
এজন্যেই বোধহয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন –
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিশিরের উপরে, একটি শিশিরবিন্দু
সবসময় বিদেশি নেতাদের ক্ষমতার দিকে তাকিয়ে থাকতাম আর আফসোস করে বলতাম- ইশ! আমাদের
দেশেও যদি এমন একজন থাকতো! অথচ শিশিরবিন্দুর মত কত বড় রত্ন যে আমাদের দেশেই ছিল
এতদিন সে খবর রাখিনি কেউ।
—————- মোশারফ হোসেন