পোষ্যদের অধিকার ও রেলওয়ের ঐতিহ্য রক্ষায় খোলা চিঠি

- Update Time : ০৯:৫৪:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
- / ১৩৪ Time View

একটি গভীর সংকট:
আজ বাংলাদেশের রেলওয়ে সেই ঐতিহাসিক অবলম্বন হারাতে বসেছে, যার ভিত্তি ছিল দায়িত্ব, শৃঙ্খলা ও মানবিকতা।
১৯৪৭ সাল থেকে প্রচলিত ৪০% পোষ্য কোটা, যা ছিল কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য একটি স্বীকৃত ন্যায্যতা, তা রেলওয়ে নিয়োগ বিধিমালা-২০২০-এর “সংশোধন”-এর আড়ালে গোপনে বিলুপ্ত করার আয়োজন চলছে। এটি কেবল একটি নীতি পরিত্যাগ নয়, এটি এক প্রজন্মের সঙ্গে রাষ্ট্রের মানবিক প্রতারণা।
অন্যদিকে, রেলওয়ের মহাপরিচালকের (DG) প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা খর্ব করে তাকে একটি প্রতীকী পদে রূপান্তর করা হয়েছে। এর ফলে নিয়োগ, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা, প্রকল্প বাস্তবায়নসহ সব কিছুই এখন নির্দিষ্ট আমলাতান্ত্রিক চক্রের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। এ প্রক্রিয়া রেলওয়ের শাসন কাঠামোর শেকড় নাড়িয়ে দিয়েছে।
আমাদের দাবি ও অঙ্গীকার:
১. পোষ্য কোটা পূর্ণভাবে সংরক্ষণ করতে হবে – এটি একটি রেল-পরিবারের মানবিক সুরক্ষা বলয়
২. মহাপরিচালকের ঐতিহাসিক ও সংবিধানসম্মত ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে – যেন রেলওয়ে আবার সুশাসনের পথে ফিরে আসে
৩. রেলওয়ে পোষ্যদের জন্য প্রশিক্ষণ, তথ্যভাণ্ডার ও আবাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে
৪. নিয়োগ ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনিক সংস্কার জরুরি
৫. রেলওয়ের ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য ও নৈতিক ঐতিহ্য রক্ষায় একটি আলাদা নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে
আহ্বান ও প্রত্যয়:
এই চিঠি কোনো বিরোধিতা নয়—এটি একটি আত্মসংলাপ, একটি আত্মসমালোচনা। রেলওয়ে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পোষ্যরা সবাই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। আজ আমরা যদি পোষ্যদের প্রতি অবহেলা করি, আগামীকাল তার ফল ভোগ করবে রেলওয়ের আত্মা।
আমার প্রত্যাশা,আপনারা যাঁরা এখন রেলওয়ের দায়িত্বে আছেন—আপনারাই এই পরিবর্তনের চালক হবেন। আপনারাই ইতিহাস রক্ষার সৈনিক হবেন।
রেলওয়ে পোষ্যদের অধিকার ফিরিয়ে দিন, রেলওয়ের মহাপরিচালকের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন, রেলওয়েকে তার অতীতের সম্মান ও ভবিষ্যতের গৌরব ফিরিয়ে দিন।
মনিরুজ্জামান মনির
সভাপতি
বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি