০৭:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

ঝালকাঠির রাজাপুর আংগারিয়া মহিলা মাদ্রাসায় বিভিন্ন অনিয়মে ভরপুর ,শিক্ষা কার্যক্রমে ভাটা, নেই কোন তদারকি 

Reporter Name
  • Update Time : ০৩:১০:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৩৩ Time View
steaker
আমিনুল ইসলাম,ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের আংগারিয়া এস.এম মহিলা মাদ্রাসা (ফরিদের মাদ্রাসা) পরিচালনায় নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা না আসলেও হাজিরা খাতায় তাদের উপস্থিতি দেখাচ্ছে আংগারিয়া এস.এম মহিলা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকরা। প্রতিষ্ঠানটিতে কাগজ কলমে যদিও শিক্ষার্থী ২২০ জন দেখানো হয়েছে যার মধ্যে ইবতেদায়ী শাখায়ই ১০৯ জন। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিদিন শিক্ষার্থী উপস্থিতি ৩০ এর কোঠায়। শিক্ষার্থী না থাকলেও প্রতারণার মাধ্যমে হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি দেখিয়ে মাদ্রাসায় কর্মরত ১৬ শিক্ষক-কর্মচারী প্রতি মাসে বেতন তুলছেন ৩ লাখ ৩০ হাজার ৬২৯ টাকা। এই পুরো টাকাটাই যাচ্ছে সরকারের গচ্ছা। অভিযোগ রয়েছে শিক্ষকরা খেয়াল খুশি মতো মাদ্রাসায় আসা যাওয়া করে। ময়লা ও কর্দমাক্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্লাসরুমে পাঠদান করানো হয় শিক্ষার্থীদের। নিয়ম না মেনেই শিক্ষকরা ইচ্ছে মতো নিচ্ছে ক্লাস। শিক্ষার্থীরা বাড়িতে থাকলেও তাদের হাজিরা খাতায় উপস্থিতি দিয়ে রাখছেন শিক্ষকরা।
মাদ্রাসা ঘুরে দেখা যায়, প্রথম শ্রেনিতে কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত নেই,দ্বিতীয় শ্রেণিতে দুই জন,তৃতীয় শ্রেণিতে তিনজন,চতুর্থ শ্রেণিতে দুইজন,পঞ্চম শ্রেণিতে চারজন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে চারজন,সপ্তম শ্রেণিতে আট জন,অস্টম শ্রেণিতে একজনও উপস্থিত নেই,নবমে তিন জন এবং দশমে চারজন শিক্ষার্থী উপস্থিত আছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুর গড়াতেই প্রতিদিন ছুটি ঘোষণা করা হয় মাদ্রাসাটিতে। এতে শিক্ষার্থীরা যথাযথ পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকরা ইচ্ছামতো আসা-যাওয়া করেন এবং পাঠদানে অনাগ্রহী। এর ফলে সাম্প্রতিক দাখিল পরীক্ষায় মাদ্রাসাটির ফলাফলও ভয়াবহ হয়েছে। এ বছর ১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও পাস করেছে মাত্র ২ জন।
id
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন, নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ,শিক্ষা কর্মকর্তা তদারকি না থাকার কারন এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের জবাবদিহি বাড়ানো না হলে মাদ্রাসাটির মানোন্নয়ন সম্ভব হবে না।
মাদ্রাসার সুপার মোঃ ছালেক জানায়,মাদ্রাসার ক্লসরুমে পানি জমে কর্দমক্ত হয়ে গেছে এবং আয়া না থাকার কারনে অপরিস্কার। এ এলাকার মেয়েদের অল্প বয়সে বিবাহ হয়ে যায় যে কারনে মাদ্রসায় শিক্ষার্থী কম। তাদের বাল্য বিবাহে বাঁধা দিতে গেলে অন্য শিক্ষার্থীরাও মাদ্রাসায় আসেনা। মাদ্রাসায় শতভাগ উপস্থিতি দেখানে লাগে এর জন্য শিক্ষার্থীরা বাড়িতে থাকলেও তাদের হাজিরা খাতায় উপস্থিত দেয়া হয়।
রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম হারুন আর রশিদ জানায়,এ বিষয়ে মাদ্রসা কর্তৃপক্ষকে শোকজ করা হবে। শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত থাকলে তাদের হাজিরা খাতায় উপস্থিত দেয়া অন্যায়। মাদ্রাসা পরিদর্শন করে তাদের বিরুদ্ধে বেতন বন্ধ সহ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

ঝালকাঠির রাজাপুর আংগারিয়া মহিলা মাদ্রাসায় বিভিন্ন অনিয়মে ভরপুর ,শিক্ষা কার্যক্রমে ভাটা, নেই কোন তদারকি 

Update Time : ০৩:১০:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
steaker
আমিনুল ইসলাম,ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের আংগারিয়া এস.এম মহিলা মাদ্রাসা (ফরিদের মাদ্রাসা) পরিচালনায় নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা না আসলেও হাজিরা খাতায় তাদের উপস্থিতি দেখাচ্ছে আংগারিয়া এস.এম মহিলা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকরা। প্রতিষ্ঠানটিতে কাগজ কলমে যদিও শিক্ষার্থী ২২০ জন দেখানো হয়েছে যার মধ্যে ইবতেদায়ী শাখায়ই ১০৯ জন। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিদিন শিক্ষার্থী উপস্থিতি ৩০ এর কোঠায়। শিক্ষার্থী না থাকলেও প্রতারণার মাধ্যমে হাজিরা খাতায় শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি দেখিয়ে মাদ্রাসায় কর্মরত ১৬ শিক্ষক-কর্মচারী প্রতি মাসে বেতন তুলছেন ৩ লাখ ৩০ হাজার ৬২৯ টাকা। এই পুরো টাকাটাই যাচ্ছে সরকারের গচ্ছা। অভিযোগ রয়েছে শিক্ষকরা খেয়াল খুশি মতো মাদ্রাসায় আসা যাওয়া করে। ময়লা ও কর্দমাক্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্লাসরুমে পাঠদান করানো হয় শিক্ষার্থীদের। নিয়ম না মেনেই শিক্ষকরা ইচ্ছে মতো নিচ্ছে ক্লাস। শিক্ষার্থীরা বাড়িতে থাকলেও তাদের হাজিরা খাতায় উপস্থিতি দিয়ে রাখছেন শিক্ষকরা।
মাদ্রাসা ঘুরে দেখা যায়, প্রথম শ্রেনিতে কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত নেই,দ্বিতীয় শ্রেণিতে দুই জন,তৃতীয় শ্রেণিতে তিনজন,চতুর্থ শ্রেণিতে দুইজন,পঞ্চম শ্রেণিতে চারজন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে চারজন,সপ্তম শ্রেণিতে আট জন,অস্টম শ্রেণিতে একজনও উপস্থিত নেই,নবমে তিন জন এবং দশমে চারজন শিক্ষার্থী উপস্থিত আছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুর গড়াতেই প্রতিদিন ছুটি ঘোষণা করা হয় মাদ্রাসাটিতে। এতে শিক্ষার্থীরা যথাযথ পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকরা ইচ্ছামতো আসা-যাওয়া করেন এবং পাঠদানে অনাগ্রহী। এর ফলে সাম্প্রতিক দাখিল পরীক্ষায় মাদ্রাসাটির ফলাফলও ভয়াবহ হয়েছে। এ বছর ১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও পাস করেছে মাত্র ২ জন।
id
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন, নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ,শিক্ষা কর্মকর্তা তদারকি না থাকার কারন এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের জবাবদিহি বাড়ানো না হলে মাদ্রাসাটির মানোন্নয়ন সম্ভব হবে না।
মাদ্রাসার সুপার মোঃ ছালেক জানায়,মাদ্রাসার ক্লসরুমে পানি জমে কর্দমক্ত হয়ে গেছে এবং আয়া না থাকার কারনে অপরিস্কার। এ এলাকার মেয়েদের অল্প বয়সে বিবাহ হয়ে যায় যে কারনে মাদ্রসায় শিক্ষার্থী কম। তাদের বাল্য বিবাহে বাঁধা দিতে গেলে অন্য শিক্ষার্থীরাও মাদ্রাসায় আসেনা। মাদ্রাসায় শতভাগ উপস্থিতি দেখানে লাগে এর জন্য শিক্ষার্থীরা বাড়িতে থাকলেও তাদের হাজিরা খাতায় উপস্থিত দেয়া হয়।
রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম হারুন আর রশিদ জানায়,এ বিষয়ে মাদ্রসা কর্তৃপক্ষকে শোকজ করা হবে। শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত থাকলে তাদের হাজিরা খাতায় উপস্থিত দেয়া অন্যায়। মাদ্রাসা পরিদর্শন করে তাদের বিরুদ্ধে বেতন বন্ধ সহ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।