“আমাদের দেশ কোন পথে চলছে”

- Update Time : ০৫:৪৭:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫
- / ১২৬ Time View
আমাদের দেশে জনবিক্ষোভের মুখে বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া
জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। তারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে যতদ্রুত সম্ভব দায়িত্ব
নেওয়ার আহ্বান জানান। ৫ আগষ্ট সোমবার জন আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে
যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন। কিছুদিন আগে
দুর্দান্ত দাপুটে তোফায়েল স্যারের হাড্ডিসার চেহারার ছবি নেট জগতে ঘুরতে দেখলাম। উনার দাপটের
ভয়ে বাঘ-ছাগলে এক ঘাটে পানি না খেলেও, আম-জনতা যে তার ভয়ে তটস্থ থাকত সেটি বলার
অপেক্ষা রাখে না। ইনি কিন্তু তার দাপট থাকা অবস্থায় টুপ করে মারা যাবেন না। প্রকৃতি বলেন আর
সৃষ্টিকর্তার কথাই বলেন, তার একটা প্রতিশোধ অবশ্যই আছে। মেঘনা নদীর ইলিশ বিশ্ববিখ্যাত
কিন্তু সেই ইলিশ এখন আর সেই স্বাদ নাই। বিশ্ববিখ্যাত ইলিশ এখন স্বাদের দিক থেকে স্বরপুটির
সাথে তাল মিলাতে পারে না। বিশেষ করে বিগত ১৫ বছর থেকে স্বাদ কমতে কমতে শুন্যের কোটায়।
আপনারা নিশ্চয় সেলিম নামে একজনের নাম জানেন। আরে ভাই বিখ্যাত হাজি সেলিম না, চাদপুরের
চেয়ারম্যান সেলিম, দিপু মনি স্যারের টাকার খনি। ইনি নাকি শ্রমিক বা নৌকার মাঝি ছিলেন, এনার
মাধ্যমে দিপু মনি স্যার মেঘনা থেকে অবৈধভাবে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করতেন। ইনি এতটাই
বেপরোয়া ছিলেন যে বালু উত্তোলন এর জন্য কোন প্রকার অনুমতি বা সরকারি কোষাগারে কোন অর্থ
জমা করেন নাই। বালু উত্তোলন এর জন্য সর্ব্বাগে অনুমতি লাগে আর নির্ধারিত সরকারি টাকা
পরিশোধ করতে হয়। দিপু মনি চাইলেই নিমিষেই অনুমতি নিতে পারতেন কিন্তু নেন নাই, কারন বালু
মহাল ইজারা নিলে নির্দিষ্ট নিয়মে খনন করতে হবে।
নিয়ম কানুন মানলেতো আর লাভ হবে না। এই
সেলিমের বিরুদ্ধে এক নির্ভিক সাংবাদিক যখন জীবনের মায়া ত্যাগ করে লিখেন, তখন দিপু মনি
সেলিমের মাথা থেকে হাত উঠিয়ে নেন। আর আমাদেরকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করেন যে সেলিমের সাথে
তার সম্পর্কের গুজব একটি সূদুর প্রসারি ষড়যন্ত্র এর অংশ। মেঘনার ইলিশের স্বাদ কেন
অতুলনীয়, সাগর বা অন্যদেশের ইলিশের চেয়ে । যদিও সব একই জাতের। পদ্মা নদীতে অনেক আগেই
বালু উত্তোলন করে বা ফারাক্কার কারনে এই নদীর ইলিশ এখন ইতিহাস মাত্র। আর মেঘনা ধ্বংসের
কারণ এই দিপু মনি স্যার। এই দিপু মনিও প্রকৃতির বা সৃষ্টিকর্তার প্রতিশোধ থেকে বাচবে না। শোনা
যায় পৃথিবীতে কৃত অপকর্মের শাস্তি এই পৃথিবীতে ৮০ ভাগ হয়। বাকিটা আখেরাতে। ঘুষখোর,
দুর্নীতিবাজ,সন্ত্রাসী , সম্পদ দখলকারী কেউই প্রকৃতির বা সৃষ্টিকর্তার বিচার থেকে বাদ যায় না।
আমাদের চারপাশে দেখেন এক সময়ের ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসী – সম্পদ দখলকারী যারা তার
সন্তানদের বিদেশে লেখাপড়ার জন্য বা পরিবারের আরাম আয়েসি জীবনযাত্রার জন্য দুর্নীতি
করেছেন, তারা জীবনের শেষ বেলায় অসহায় বা পরিবার পরিজনের অত্যাচারে করুন জীবনযাপন
করছেন। টুপ করে মারা যান না। বাংলাদেশে বর্তমানে পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে খুব দ্রুত। এ
কারণে সব ঘটনার কার্যকারণ বোঝা মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে; বিশেষত দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন খুব
বেশি অস্থির হয়ে পড়ার কারণে এখন সামনের দিনগুলোতে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা অনুমান করাও প্রায়
অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের
পতন ও পলায়নের পর মানুষ দেশের উন্নতি ও স্থিতিশীলতার বিষয়ে খুব আশাবাদী হয়ে উঠেছিল।
কিন্তু এটা কি দুর্ভাগ্য না ষড়যন্ত্র, যে যখনই এদেশের সাধারণ মানুষ তাদের ভবিষ্যতের বিষয়ে
আশাবাদী হয়েছে, তখনই কোনো কোনো গোষ্ঠী তাদের স্বীয় হীনস্বার্থ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে
জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদের ভাগ্যকে গড়ার চেষ্টা করেছে? যখন একটি দেশে বিদ্রোহ হয় এবং একজন
স্বৈরশাসকের পতন ঘটে, তখন সাংবাদিকতার বিচ্যুতিও অস্বাভাবিক নয়। সর্বোপরি,
উদ্দেশ্যমূলকভাবে কী ঘটছে, সংবাদমাধ্যমকে অবশ্যই তা তুলে ধরতে হবে এবং পরবর্তী সময়ে কী
ঘটতে পারে, তাও চিহ্নিত করতে হবে। ‘মানুষ জেগে উঠেছে’ বলতে পেরে খুব ভালো লাগছে। তারপর
‘জনগণ’-এর পাশে দাঁড়াতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ মূলত ঐক্যবদ্ধ নয়। তারা
দ্বিধাবিভক্ত। দেশটির প্রশাসনও সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিকীকরণ ও দুর্নীতিগ্রস্ত। সবচেয়ে
বিরক্তিকর হচ্ছে এসব কিছুর সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বেসামাল তর্ক। তারা মনে করছে দেশ
এগিয়ে যাচ্ছে, তাই তাকে পিছিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জনশক্তি রফতানি কমেছে। জনশক্তি
পাঠানোর তুলনায় ফিরে আসার হার বেশি। কার্যত গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে পিছিয়েছে বাংলাদেশ। তবে
বিদ্যুৎ, রফতানি, মাথাপিছু আয় ও রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুতে লোডশেডিং সামান্য কমেছে।
খাদ্যের মজুদ বেড়েছে (দৈনিক কালের কণ্ঠ, ২৭ অক্টোবর), যা বেড়েছে বা কমেছে সবই ভালো
অবস্থার ইঙ্গিত দেয় না । সব মিলিয়ে দেখতে গেলে দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। আল্লাহ্
আমাদের সহায় হউন।
কলমে – মোশারফ হোসেন।