০১:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এক ঐতিহ্যের সাক্ষী

Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৩৫:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১৪৭ Time View

 

মোঃ নাসির উদ্দিন, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর রাজশাহী, যা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। রাজশাহীর সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্র হলো রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন। এই স্টেশন শুধু একটি যাত্রীবাহী কেন্দ্র নয়, বরং এটি রাজশাহীর ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে ভারতীয় উপমহাদেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকাশ ঘটে। ১৮৯০ সালের দিকে রাজশাহী অঞ্চলে রেলপথ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করা হয় এবং ১৯৩০ সালে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। মূলত, ব্রিটিশ শাসনামলে পাট, চামড়া ও অন্যান্য কৃষিপণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে এই স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছিল।

শুরুর দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ছিল একটি ছোট্ট প্ল্যাটফর্ম ও কাঠের তৈরি স্থাপনা। স্টেশনে ছিল হাতে লেখা সময়সূচি, কয়লার ইঞ্জিন এবং সীমিত সংখ্যক ট্রেন। ধীরে ধীরে যাত্রীসংখ্যা ও পণ্য পরিবহনের চাহিদা বাড়তে থাকে, ফলে স্টেশনটির সম্প্রসারণ করা হয়।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়ে যায়। এই সময় রেলপথ আরও সম্প্রসারিত হয় এবং রাজশাহীকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়। ১৯৬০-এর দশকে স্টেশনের অবকাঠামো আধুনিকায়ন করা হয় এবং নতুন প্ল্যাটফর্ম ও ওয়েটিং রুম যুক্ত করা হয়।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যুদ্ধকালীন সময়ে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার পুনরায় স্টেশনটির উন্নয়ন শুরু করে।
আধুনিকায়নের পথে রাজশাহী স্টেশন ।
বর্তমানে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় সমৃদ্ধ। এখানে রয়েছে কম্পিউটারাইজড টিকেট ব্যবস্থা, আধুনিক প্ল্যাটফর্ম, ওয়েটিং লাউঞ্জ, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও খাবারের দোকান। এখন রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে ট্রেন চলাচল করছে, যার মধ্যে পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস অন্যতম।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন কেবলমাত্র একটি যাত্রীবাহী স্থাপনা নয়, এটি রাজশাহীর ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি অংশ। শত বছরের বেশি সময় ধরে এই স্টেশন দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রযাত্রার সাক্ষী হয়ে রয়েছে। ভবিষ্যতে স্টেশনটির আরও আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে এটি আরও উন্নত রূপ নেবে বলে আশা করা যায়।

এখানে রয়েছে কম্পিউটারাইজড টিকেট ব্যবস্থা, আধুনিক প্ল্যাটফর্ম, ওয়েটিং লাউঞ্জ, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও খাবারের দোকান। এখন রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে ট্রেন চলাচল করছে, যার মধ্যে পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস অন্যতম।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন কেবলমাত্র একটি যাত্রীবাহী স্থাপনা নয়, এটি রাজশাহীর ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি অংশ। শত বছরের বেশি সময় ধরে এই স্টেশন দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রযাত্রার সাক্ষী হয়ে রয়েছে। ভবিষ্যতে স্টেশনটির আরও আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে এটি আরও উন্নত রূপ নেবে বলে আশা করা যায়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

One thought on “রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এক ঐতিহ্যের সাক্ষী

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন এক ঐতিহ্যের সাক্ষী

Update Time : ০৩:৩৫:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫

 

মোঃ নাসির উদ্দিন, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর রাজশাহী, যা পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। রাজশাহীর সাথে সারা দেশের রেল যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্র হলো রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন। এই স্টেশন শুধু একটি যাত্রীবাহী কেন্দ্র নয়, বরং এটি রাজশাহীর ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে ভারতীয় উপমহাদেশে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকাশ ঘটে। ১৮৯০ সালের দিকে রাজশাহী অঞ্চলে রেলপথ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করা হয় এবং ১৯৩০ সালে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। মূলত, ব্রিটিশ শাসনামলে পাট, চামড়া ও অন্যান্য কৃষিপণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে এই স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছিল।

শুরুর দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ছিল একটি ছোট্ট প্ল্যাটফর্ম ও কাঠের তৈরি স্থাপনা। স্টেশনে ছিল হাতে লেখা সময়সূচি, কয়লার ইঞ্জিন এবং সীমিত সংখ্যক ট্রেন। ধীরে ধীরে যাত্রীসংখ্যা ও পণ্য পরিবহনের চাহিদা বাড়তে থাকে, ফলে স্টেশনটির সম্প্রসারণ করা হয়।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়ে যায়। এই সময় রেলপথ আরও সম্প্রসারিত হয় এবং রাজশাহীকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়। ১৯৬০-এর দশকে স্টেশনের অবকাঠামো আধুনিকায়ন করা হয় এবং নতুন প্ল্যাটফর্ম ও ওয়েটিং রুম যুক্ত করা হয়।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যুদ্ধকালীন সময়ে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার পুনরায় স্টেশনটির উন্নয়ন শুরু করে।
আধুনিকায়নের পথে রাজশাহী স্টেশন ।
বর্তমানে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় সমৃদ্ধ। এখানে রয়েছে কম্পিউটারাইজড টিকেট ব্যবস্থা, আধুনিক প্ল্যাটফর্ম, ওয়েটিং লাউঞ্জ, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও খাবারের দোকান। এখন রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে ট্রেন চলাচল করছে, যার মধ্যে পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস অন্যতম।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন কেবলমাত্র একটি যাত্রীবাহী স্থাপনা নয়, এটি রাজশাহীর ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি অংশ। শত বছরের বেশি সময় ধরে এই স্টেশন দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রযাত্রার সাক্ষী হয়ে রয়েছে। ভবিষ্যতে স্টেশনটির আরও আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে এটি আরও উন্নত রূপ নেবে বলে আশা করা যায়।

এখানে রয়েছে কম্পিউটারাইজড টিকেট ব্যবস্থা, আধুনিক প্ল্যাটফর্ম, ওয়েটিং লাউঞ্জ, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও খাবারের দোকান। এখন রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে ট্রেন চলাচল করছে, যার মধ্যে পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু এক্সপ্রেস ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস অন্যতম।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন কেবলমাত্র একটি যাত্রীবাহী স্থাপনা নয়, এটি রাজশাহীর ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি অংশ। শত বছরের বেশি সময় ধরে এই স্টেশন দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রযাত্রার সাক্ষী হয়ে রয়েছে। ভবিষ্যতে স্টেশনটির আরও আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে এটি আরও উন্নত রূপ নেবে বলে আশা করা যায়।