০৭:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থে দূর্নীতি

ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থে দূর্নীতি কোটি টাকার বিতর্কিত

জসীমউদ্দীন ইতি ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৩:১৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২২৪ Time View

জসীমউদ্দীন ইতি ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থে দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে পাঠাগার গড়ার নামে বিতর্কিত ও শিশুদের পড়ার অনুপযোগী গল্পের বই ও উপকরণ বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিচ্ছে একটি মহল। প্রায় এক কোটি সরকারি বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চক্রান্তে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৪০৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে এসব গল্পের বই পৌঁছে দিতে মেতে উঠেছে চিহ্নিত একটি মহল বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি দূর্নীতি দমন কমিশন সহ বিভিন্ন দপ্তরে জনৈক শিক্ষকের অভিযোগের পর দূর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় প্রধান শিক্ষক জানান, “ক’দিন পূর্বে ‘বালিয়াডাঙ্গী খেলা ঘর’-এর স্বত্ত্বাধিকারী মাসুদ হাসান সহ আরো কয়েকজন শিক্ষক কিছু বিদ্যালয়ে এ সকল গল্পের বই ও উপকরণ প্রথমে পৌঁছে দিলেও অভিযোগ হওয়ার পরে তাঁরা আর সরাসরি এসব গল্পের বই ও উপকরণ পৌঁছে দিচ্ছেন না। বর্তমানে চক্রটির সহায়তায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নামে সরাসরি ঢাকা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসযোগে গল্পের বই পৌঁছে যাচ্ছে কাঙ্খিত ঠিকানায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৪০৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে ১৫ হাজার টাকার গল্পের বই এবং সাড়ে ৩ হাজার টাকার শিক্ষা উপকরণ নিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বাধ্য করে প্রাথমিক শিক্ষার সাথে জড়িত মহলটি। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রাথমিক শিক্ষার বিদ্যালয় উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ উত্তোলনের পূর্বেই এ চক্রটি প্রায় কোটি টাকার বাণিজ্য টার্গেট করে এসব গল্পের বই আর শিক্ষা উপকরণ কৌশলে বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিচ্ছে। যে সব বই যাচ্ছে স্কুলে স্কুলে: একটি সূত্র জানায়, ভিশন পাবলিকেশন্স-এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হবার সাথে সাথে বিদ্যালেয়ের জন্য এ একটি বইয়ের তালিকা প্রকাশনীটি চক্রটির হাতে তুলে দেয়। তালিকাটিতে প্রতিটি বইয়ের দাম ২শ’ টাকা থেকে ১ হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা পর্যন্ত দেখানো হয়। সব মিলিয়ে বিভিন্ন আইটেমের বইয়ের দাম সর্বমোট ২৫ হাজার টাকা উল্লেখ করা হলেও শতকরা ৪০ ভাগ কমিশন দেখিয়ে ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ মূল্যশ দেখানো হয় ঐ ভাউচারে। বইয়ের সাথে এ ভাউচারটি প্রতিটি বিদ্যালয়ের পাঠানো হয়। আর এ ভাউচারটি ব্যওবহার করে প্রধান শিক্ষকগণ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রাথমিক শিক্ষার বিদ্যালয় উন্নয়ন বরাদ্দ (স্লিপ ফান্ড) থেকে বিল প্রস্তুত করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যোমে টাকা উত্তোলন করে সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কিংবা শিক্ষক নেতৃবৃন্দের হাতে তুলে দেওয়ার কথা! প্রধান শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করে বিদ্যালয়ের গিয়ে দেখা গেছে, পাঠানো বইয়ের মধ্যে জাফর ইকবালের ‘তবুও টুনটুনি’, হুমায়ুন আহমেদ-এর ‘একজন হিমু, নিশিকাব্যা’, অদ্বৈত মল্ল বর্মন-এর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, যাযাবর-এর ‘দৃষ্টিপাত’, বিভূতিভূষণ বন্দ্যো পাধ্যায়-এর ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’, ‘অসনি সংকেত’, প্রবীর ঘোষ-এর ‘মনের নিয়ন্ত্রণে যোগ মেডিটেশন’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর ‘বিসর্জন’, ‘সোনার তরী’, ‘গীতাঞ্জলি’, মানিক বন্দ্যো পাধ্যায়েয-এর ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ডা. রমেন মজুমদার-এর ‘ডায়াবেটিস-এ সব খাবেন’, ড. লুৎফর রহমান-এর ‘ধর্ম জীবন, ‘মানব জীবন’, ‘মহা জীবন’, হারুন-অর-রশীদ-এর ‘এই আমাদের বাংলাদেশ’, ছোটদের জগদিশ চন্দ্র বসু’, ‘ছোটদের সুভাস চন্দ্র বসু’, ডা. শ্যা মল চক্রবর্তীর ‘কোন অসুখে কী খাবেন’, ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ভিশন পাবলিকেশন্স-এর সরবরাহকৃত তালিকাটিতে মোট ৫২ ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থে দূর্নীতি

ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থে দূর্নীতি কোটি টাকার বিতর্কিত

Update Time : ০৩:১৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

জসীমউদ্দীন ইতি ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থে দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে পাঠাগার গড়ার নামে বিতর্কিত ও শিশুদের পড়ার অনুপযোগী গল্পের বই ও উপকরণ বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিচ্ছে একটি মহল। প্রায় এক কোটি সরকারি বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চক্রান্তে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৪০৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে এসব গল্পের বই পৌঁছে দিতে মেতে উঠেছে চিহ্নিত একটি মহল বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি দূর্নীতি দমন কমিশন সহ বিভিন্ন দপ্তরে জনৈক শিক্ষকের অভিযোগের পর দূর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় প্রধান শিক্ষক জানান, “ক’দিন পূর্বে ‘বালিয়াডাঙ্গী খেলা ঘর’-এর স্বত্ত্বাধিকারী মাসুদ হাসান সহ আরো কয়েকজন শিক্ষক কিছু বিদ্যালয়ে এ সকল গল্পের বই ও উপকরণ প্রথমে পৌঁছে দিলেও অভিযোগ হওয়ার পরে তাঁরা আর সরাসরি এসব গল্পের বই ও উপকরণ পৌঁছে দিচ্ছেন না। বর্তমানে চক্রটির সহায়তায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নামে সরাসরি ঢাকা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসযোগে গল্পের বই পৌঁছে যাচ্ছে কাঙ্খিত ঠিকানায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৪০৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে ১৫ হাজার টাকার গল্পের বই এবং সাড়ে ৩ হাজার টাকার শিক্ষা উপকরণ নিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বাধ্য করে প্রাথমিক শিক্ষার সাথে জড়িত মহলটি। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রাথমিক শিক্ষার বিদ্যালয় উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ উত্তোলনের পূর্বেই এ চক্রটি প্রায় কোটি টাকার বাণিজ্য টার্গেট করে এসব গল্পের বই আর শিক্ষা উপকরণ কৌশলে বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিচ্ছে। যে সব বই যাচ্ছে স্কুলে স্কুলে: একটি সূত্র জানায়, ভিশন পাবলিকেশন্স-এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হবার সাথে সাথে বিদ্যালেয়ের জন্য এ একটি বইয়ের তালিকা প্রকাশনীটি চক্রটির হাতে তুলে দেয়। তালিকাটিতে প্রতিটি বইয়ের দাম ২শ’ টাকা থেকে ১ হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা পর্যন্ত দেখানো হয়। সব মিলিয়ে বিভিন্ন আইটেমের বইয়ের দাম সর্বমোট ২৫ হাজার টাকা উল্লেখ করা হলেও শতকরা ৪০ ভাগ কমিশন দেখিয়ে ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ মূল্যশ দেখানো হয় ঐ ভাউচারে। বইয়ের সাথে এ ভাউচারটি প্রতিটি বিদ্যালয়ের পাঠানো হয়। আর এ ভাউচারটি ব্যওবহার করে প্রধান শিক্ষকগণ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রাথমিক শিক্ষার বিদ্যালয় উন্নয়ন বরাদ্দ (স্লিপ ফান্ড) থেকে বিল প্রস্তুত করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যোমে টাকা উত্তোলন করে সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কিংবা শিক্ষক নেতৃবৃন্দের হাতে তুলে দেওয়ার কথা! প্রধান শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করে বিদ্যালয়ের গিয়ে দেখা গেছে, পাঠানো বইয়ের মধ্যে জাফর ইকবালের ‘তবুও টুনটুনি’, হুমায়ুন আহমেদ-এর ‘একজন হিমু, নিশিকাব্যা’, অদ্বৈত মল্ল বর্মন-এর ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, যাযাবর-এর ‘দৃষ্টিপাত’, বিভূতিভূষণ বন্দ্যো পাধ্যায়-এর ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’, ‘অসনি সংকেত’, প্রবীর ঘোষ-এর ‘মনের নিয়ন্ত্রণে যোগ মেডিটেশন’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর ‘বিসর্জন’, ‘সোনার তরী’, ‘গীতাঞ্জলি’, মানিক বন্দ্যো পাধ্যায়েয-এর ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ডা. রমেন মজুমদার-এর ‘ডায়াবেটিস-এ সব খাবেন’, ড. লুৎফর রহমান-এর ‘ধর্ম জীবন, ‘মানব জীবন’, ‘মহা জীবন’, হারুন-অর-রশীদ-এর ‘এই আমাদের বাংলাদেশ’, ছোটদের জগদিশ চন্দ্র বসু’, ‘ছোটদের সুভাস চন্দ্র বসু’, ডা. শ্যা মল চক্রবর্তীর ‘কোন অসুখে কী খাবেন’, ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ভিশন পাবলিকেশন্স-এর সরবরাহকৃত তালিকাটিতে মোট ৫২ ।