১০:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

দুর্গা পূজার নিরাপত্তা অন্তবর্তী সরকার-এর এক বছর বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মানে রাষ্ট্রের করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

Reporter Name
  • Update Time : ১২:৪২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৫৫ Time View

২০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল  ১০.৩০ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে দুর্গা পূজার নিরাপত্তা অন্তবর্তী সরকার-এর এক বছর বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মানে রাষ্ট্রের করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্ট্রের ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী তপন চন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর সংখ্যা লঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ মকবুল হুসেইন, গণঅধিকার পরিষদের রিজু উচ্চতর পরিষদ সদস্য হাবিবুর রহমান, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর জাতীয় শিক্ষা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক (অবঃ) মোঃ নাসির উদ্দিন খান, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন ফ্রন্ট এর সহ-সভাপতি বিশিষ্ট কলামিস্ট সুরঞ্জন ঘোষ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, গরীব দুঃখী জনতা পার্টির চেয়ারম্যান নিউটন অধিকারী, গণমুক্তি জোটের মহাসচিব আক্তার হোসেন, গণফোরামের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট গোলাম মোস্তফা, গনমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ড.শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়দ, আশেক্কীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ নূরে হাসান সুরেশ্বরী দিপু নূরী,  ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ-এনসিবি’র চেয়ারম্যান কাজী ছাব্বীর, স্বদেশ বিচিত্রা পত্রিকার সম্পাদক কবি অশোক ঘোষ, ভক্তসংঘ সোসাইটি বাংলাদেশ সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র পাল, সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ হিন্দু মহাসংঘের সভাপতি পিজুষ দাস, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সনাতনী ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক শান্ত দাস। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টির প্রাণতোষ তালুকদার, সুরজিৎ দত্ত লিটু, কল্পনা তালুকদার, শ্রীনাথ দাস, টনি দাস, শ্যামল দাস, বিপ্লব হালদার, রাতুন নাথ, বিকাশ অধিকারী প্রমুখ।


সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক অশোক তরু সাহা। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন বৈষম্যমূলক চিত্র তুলে ধরেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুমন কুমার রায়। তিনি বলেন, আপনারা জানেন ১৯৪৭ সালে থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অত্যাচারিত নির্যাতিত ও নিপিড়ীত হয়ে আসছে, ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে বাংলাদেশের সনাতন সম্প্রদায়ের সম্পত্তিকে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে আইন করা হয়। যা পাকিস্তানে আমলে বাতিল হলেও বাংলাদেশে বিদ্যমান। যা বাংলাদেশে অর্পিত সম্পত্তি আইন নামে বর্তমানে চলমান, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক যে ভুখন্ডটির জন্ম হলো তার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে। ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ভাংচুরকে কেন্দ্র করে, ২০০১ সালে সাধারন নির্বাচন পরবর্তী ২০০১-২০০৫ তৎকালীন জোট সরকারের সময় অস্যংখ্য সংখ্যালগু সম্প্রদায় বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ২০০৮-২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগের আমলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সব থেকে বেশি অত্যাচার নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, একটি ঘটনার ও সরকার বিচার করে নাই, বরং কোথাও নির্যাতন কারীদের পুরষ্কৃত করা হয়েছে। এ সকল ঘটনার মধ্যে (রামু, নাসির নগর, কুমিল্লা, শাল্লা, গঙ্গাচড়া, অন্যতম)।


৫ আগষ্ট পট পরিবর্তনের পর এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় স্বপ্ন দেখে ছিল, জুলাই ছাত্রজনতার রক্তের মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মান হবে। সেই বাংলাদেশ  বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মান হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অতীতের যে কোন সরকার থেকে অন্তবর্তী সরকার এর আমলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেমন উপক্ষিত, নির্যাতীত, নিপীড়িত তেমনি বৈষ্যমের শিকার। তার কিছু চিত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো। ইতিমধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ তাদের দুই দফা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতার ২,৫০০  ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন।  আন্তজার্তিক মানবাধিকার সংগঠন ঐজঈইগ ১ আগষ্ট ২০২৫ সুপ্রীম কোর্ট ঢাকায় এক আলোচনা সভায় জুন-জুলাই ২০২৫ সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা ও ধর্মীয় নিপীড়ন এর তথ্য তুলে ধরেন সেখানে- উপাসানলায় হামলা -১৫ টি, সংখ্যালঘু পরিবারে বাড়ি ঘরে হামলা-৩৬ টি, সংখ্যালঘুকারী ও পুরুষ হত্যা-১৬ জন, জোরপূর্বক ধর্মান্তর-১০ জন, ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ ১২ জন, নিখোজনারী ও শিশু-২৮ জন, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি ১১/০৪/২০২৪ ইং ২০/০৯/২০২৫ ইং পর্যন্ত বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সংঘটিত ২০৮ টি তথ্য সংগ্রহ করেছে।  বিগত ১৭/০৯/২০২৫ ইং তারিখে ঢাকেরশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন-“সব ধর্মের সমান মর্যাদা দিতে বাধ্য সরকার, কোন ধর্মকে আলাদা করে দেখতে পারবে না রাষ্ট্র” কিন্তু অত্যান্ত পরিপ্তের বিষয় অন্তবর্তী সরকার এর আমলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ক। ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একটি পরিসংখ্যা তুলে ধরা হলো-  ১। বিচারক নতুন নিয়োগ- ৪৮, সংখ্যালঘু ০১ জন । ২। ভাইস চ্যান্সেলর ৫৪জন, সংখ্যালঘু শূন্য ৩। সচিব ও সচিব পদ মর্যাদা পদ ৭০টি, সংখ্যালঘু শূন্য ৪। উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পদমর্যাদা,  প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা ২২+৩+৭জন, সংখ্যালঘু শূন্য ৫।  জেলা প্রশাসক  ৬৪ জন, সংখ্যালঘু শূন্য ৬। পুলিশ আইজিপি-এআইজি পর্যন্ত  ৭২ জন, সংখ্যালঘু শূন্য ৭। পুলিশ সুপার ৬৪ জন, ২ জন ৮। সিনিঃ জেলা ও দায়রা জজ ৬৪ জন, ১ জন ৯। পুলিশ কমিশনার (বিভাগীয় ও মেট্রো পুলিশ কমিশনার), সংখ্যালঘু শূন্য ১০। চিফ জুডিঃ ম্যাজিষ্ট্রেট ৬৪ জন, সংখ্যালঘু ৩ জন ১১। মহানগর দায়রা জজ, সংখ্যালঘু শূন্য ১২। চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট, সংখ্যালঘু শূন্য ১৩। ঢাকা জজ কোর্ট পি.পি. জিপি ৬৬৯ জন, সংখ্যালঘু শূন্য ১৪। নির্বাচন কমিশন, সংখ্যালঘু শূন্য ১৫। পাবলিক সার্ভিস কমিশন, সংখ্যালঘু শূন্য ১৬। ডিপুটি এর্ট্যানী জেনারেল, সংখ্যালঘু এক ১৭। সহকারি এর্ট্যানী জেনারেল, সংখ্যালঘু শূন্য। তিনি আরো বলন, ১৯৭০ সালে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা ছিল ১৯%। বর্তমানে ৮.৬ শতাংশ। আইন ও শালিস কেন্দ্রের তথ্য মতে ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল ১৫৮০টি এবং ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ জুন পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে ১০৪৫টি।
১১ জানুয়ারি ২০১৪ বাংলাদেশ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে ২০০১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২০ হাজার, তার মধ্যে মৃত্যু ৬০০জন, আহত ৬০ হাজার, পঙ্গুত্ববরণ ১২ হাজার। তার মধ্যে ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৫ হাজার ঘটনা ঘটেছে। এর পরেও সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো অবলীলায় অস্বীকার করে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিনের মূখ্য সংগঠক বলেছেন, ৫ আগষ্টের পর একটি মন্দির ও ভাঙ্গে নাই, আমি তাকে যে মন্দির গুলো ভাঙ্গা হয়েছে সেই উক্ত মন্দিরগুলো পরিদর্শন করার জন্য অনুরোধ জানাবো।  মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানাচ্ছি আপনি, ১৭/০৯/২০২৫ ইং ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যা বলেছেন এক সপ্তাহের মধ্য আমরা তার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।  পরিশেষে সাংবাদিক বন্ধুুদের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক সকল জনগন ও আজকের অতিথিবৃন্দের নিকট বৈষম্যমুক্ত, অসম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মানে আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আসন্ন দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সহ ৩ (দিন) এর সরকারী ছুটি ঘোষনার জোর দাবী জানাচ্ছি।  বাংলাদেশ সনাতনী জাগরন জোটের অন্যতম চিনময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী সহ সকল বন্ধুদের দ্রুত নিশর্ত মুক্তি দাবী করছি ।(প্রেস বিজ্ঞপ্তি )

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

দুর্গা পূজার নিরাপত্তা অন্তবর্তী সরকার-এর এক বছর বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মানে রাষ্ট্রের করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

Update Time : ১২:৪২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

২০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল  ১০.৩০ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে দুর্গা পূজার নিরাপত্তা অন্তবর্তী সরকার-এর এক বছর বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মানে রাষ্ট্রের করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্ট্রের ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী তপন চন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর সংখ্যা লঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ মকবুল হুসেইন, গণঅধিকার পরিষদের রিজু উচ্চতর পরিষদ সদস্য হাবিবুর রহমান, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর জাতীয় শিক্ষা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক (অবঃ) মোঃ নাসির উদ্দিন খান, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন ফ্রন্ট এর সহ-সভাপতি বিশিষ্ট কলামিস্ট সুরঞ্জন ঘোষ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, গরীব দুঃখী জনতা পার্টির চেয়ারম্যান নিউটন অধিকারী, গণমুক্তি জোটের মহাসচিব আক্তার হোসেন, গণফোরামের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট গোলাম মোস্তফা, গনমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ড.শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়দ, আশেক্কীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ নূরে হাসান সুরেশ্বরী দিপু নূরী,  ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ-এনসিবি’র চেয়ারম্যান কাজী ছাব্বীর, স্বদেশ বিচিত্রা পত্রিকার সম্পাদক কবি অশোক ঘোষ, ভক্তসংঘ সোসাইটি বাংলাদেশ সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র পাল, সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশ হিন্দু মহাসংঘের সভাপতি পিজুষ দাস, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সনাতনী ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক শান্ত দাস। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টির প্রাণতোষ তালুকদার, সুরজিৎ দত্ত লিটু, কল্পনা তালুকদার, শ্রীনাথ দাস, টনি দাস, শ্যামল দাস, বিপ্লব হালদার, রাতুন নাথ, বিকাশ অধিকারী প্রমুখ।


সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক অশোক তরু সাহা। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন বৈষম্যমূলক চিত্র তুলে ধরেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুমন কুমার রায়। তিনি বলেন, আপনারা জানেন ১৯৪৭ সালে থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অত্যাচারিত নির্যাতিত ও নিপিড়ীত হয়ে আসছে, ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে বাংলাদেশের সনাতন সম্প্রদায়ের সম্পত্তিকে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে আইন করা হয়। যা পাকিস্তানে আমলে বাতিল হলেও বাংলাদেশে বিদ্যমান। যা বাংলাদেশে অর্পিত সম্পত্তি আইন নামে বর্তমানে চলমান, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক যে ভুখন্ডটির জন্ম হলো তার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে। ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ভাংচুরকে কেন্দ্র করে, ২০০১ সালে সাধারন নির্বাচন পরবর্তী ২০০১-২০০৫ তৎকালীন জোট সরকারের সময় অস্যংখ্য সংখ্যালগু সম্প্রদায় বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ২০০৮-২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগের আমলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সব থেকে বেশি অত্যাচার নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, একটি ঘটনার ও সরকার বিচার করে নাই, বরং কোথাও নির্যাতন কারীদের পুরষ্কৃত করা হয়েছে। এ সকল ঘটনার মধ্যে (রামু, নাসির নগর, কুমিল্লা, শাল্লা, গঙ্গাচড়া, অন্যতম)।


৫ আগষ্ট পট পরিবর্তনের পর এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় স্বপ্ন দেখে ছিল, জুলাই ছাত্রজনতার রক্তের মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মান হবে। সেই বাংলাদেশ  বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মান হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অতীতের যে কোন সরকার থেকে অন্তবর্তী সরকার এর আমলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেমন উপক্ষিত, নির্যাতীত, নিপীড়িত তেমনি বৈষ্যমের শিকার। তার কিছু চিত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো। ইতিমধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ তাদের দুই দফা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতার ২,৫০০  ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন।  আন্তজার্তিক মানবাধিকার সংগঠন ঐজঈইগ ১ আগষ্ট ২০২৫ সুপ্রীম কোর্ট ঢাকায় এক আলোচনা সভায় জুন-জুলাই ২০২৫ সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতা ও ধর্মীয় নিপীড়ন এর তথ্য তুলে ধরেন সেখানে- উপাসানলায় হামলা -১৫ টি, সংখ্যালঘু পরিবারে বাড়ি ঘরে হামলা-৩৬ টি, সংখ্যালঘুকারী ও পুরুষ হত্যা-১৬ জন, জোরপূর্বক ধর্মান্তর-১০ জন, ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ ১২ জন, নিখোজনারী ও শিশু-২৮ জন, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি ১১/০৪/২০২৪ ইং ২০/০৯/২০২৫ ইং পর্যন্ত বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সংঘটিত ২০৮ টি তথ্য সংগ্রহ করেছে।  বিগত ১৭/০৯/২০২৫ ইং তারিখে ঢাকেরশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন-“সব ধর্মের সমান মর্যাদা দিতে বাধ্য সরকার, কোন ধর্মকে আলাদা করে দেখতে পারবে না রাষ্ট্র” কিন্তু অত্যান্ত পরিপ্তের বিষয় অন্তবর্তী সরকার এর আমলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ক। ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে একটি পরিসংখ্যা তুলে ধরা হলো-  ১। বিচারক নতুন নিয়োগ- ৪৮, সংখ্যালঘু ০১ জন । ২। ভাইস চ্যান্সেলর ৫৪জন, সংখ্যালঘু শূন্য ৩। সচিব ও সচিব পদ মর্যাদা পদ ৭০টি, সংখ্যালঘু শূন্য ৪। উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পদমর্যাদা,  প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা ২২+৩+৭জন, সংখ্যালঘু শূন্য ৫।  জেলা প্রশাসক  ৬৪ জন, সংখ্যালঘু শূন্য ৬। পুলিশ আইজিপি-এআইজি পর্যন্ত  ৭২ জন, সংখ্যালঘু শূন্য ৭। পুলিশ সুপার ৬৪ জন, ২ জন ৮। সিনিঃ জেলা ও দায়রা জজ ৬৪ জন, ১ জন ৯। পুলিশ কমিশনার (বিভাগীয় ও মেট্রো পুলিশ কমিশনার), সংখ্যালঘু শূন্য ১০। চিফ জুডিঃ ম্যাজিষ্ট্রেট ৬৪ জন, সংখ্যালঘু ৩ জন ১১। মহানগর দায়রা জজ, সংখ্যালঘু শূন্য ১২। চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট, সংখ্যালঘু শূন্য ১৩। ঢাকা জজ কোর্ট পি.পি. জিপি ৬৬৯ জন, সংখ্যালঘু শূন্য ১৪। নির্বাচন কমিশন, সংখ্যালঘু শূন্য ১৫। পাবলিক সার্ভিস কমিশন, সংখ্যালঘু শূন্য ১৬। ডিপুটি এর্ট্যানী জেনারেল, সংখ্যালঘু এক ১৭। সহকারি এর্ট্যানী জেনারেল, সংখ্যালঘু শূন্য। তিনি আরো বলন, ১৯৭০ সালে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা ছিল ১৯%। বর্তমানে ৮.৬ শতাংশ। আইন ও শালিস কেন্দ্রের তথ্য মতে ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল ১৫৮০টি এবং ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ জুন পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে ১০৪৫টি।
১১ জানুয়ারি ২০১৪ বাংলাদেশ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে ২০০১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২০ হাজার, তার মধ্যে মৃত্যু ৬০০জন, আহত ৬০ হাজার, পঙ্গুত্ববরণ ১২ হাজার। তার মধ্যে ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৫ হাজার ঘটনা ঘটেছে। এর পরেও সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো অবলীলায় অস্বীকার করে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিনের মূখ্য সংগঠক বলেছেন, ৫ আগষ্টের পর একটি মন্দির ও ভাঙ্গে নাই, আমি তাকে যে মন্দির গুলো ভাঙ্গা হয়েছে সেই উক্ত মন্দিরগুলো পরিদর্শন করার জন্য অনুরোধ জানাবো।  মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানাচ্ছি আপনি, ১৭/০৯/২০২৫ ইং ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যা বলেছেন এক সপ্তাহের মধ্য আমরা তার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।  পরিশেষে সাংবাদিক বন্ধুুদের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক সকল জনগন ও আজকের অতিথিবৃন্দের নিকট বৈষম্যমুক্ত, অসম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মানে আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আসন্ন দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সহ ৩ (দিন) এর সরকারী ছুটি ঘোষনার জোর দাবী জানাচ্ছি।  বাংলাদেশ সনাতনী জাগরন জোটের অন্যতম চিনময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী সহ সকল বন্ধুদের দ্রুত নিশর্ত মুক্তি দাবী করছি ।(প্রেস বিজ্ঞপ্তি )