০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি সকল সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে জাতীয় সেমিনার

Reporter Name
  • Update Time : ০২:৪৩:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৪ Time View


দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি সকল সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিভিন্ন মত ও পথের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সমাজ প্রতিনিধি, লেখক, শিক্ষাবিদ, গবেষকসহ দেশের বৃহত্তর সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তরা ‘দেশের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ’, ‘ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি কোনো বিষয় বা পাঠ্যবই দ্রুত পর্যালোচনা ও সংশোধন’, ‘নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষানীতি সংস্কারের রূপরেখা প্রণয়ন’, এবং ‘সকল ধরণের ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি সিদ্ধান্ত বাতিল’-করার দাবি জানান। বক্তাদের আলোচনা-পর্যালোচনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে উত্থাপিত চারটি দাবিতে সকলে ঐকমত্য পোষণ করেন।

মুফতি রেজাউল করিম আবরারের পরিচালনায় জাতীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণ পরিষদ’র উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক সচিব ড. খ.ম কবিরুল ইসলাম। তাঁর উপস্থাপিত প্রবন্ধে প্রাথমিক শিক্ষায় নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অপরিসীম গুরুত্ব, শিক্ষাকর্মীর যোগ্যতার মানদণ্ড এবং পাঠ্যসূচিপুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়।

সেমিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেন, মহান আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব বলেছেন আবার শিয়াল – কুকুরের চেয়েও নিকৃষ্ট বলেছেন। তাই মানুষ হিসেবে নিজেদেকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে গড়ে তুলতে হলে ইসলামের আদর্শের মূল্যবোধ ধারণ করতে হবে। তিনি বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্যের জবাবে বলেন, জাতি ৫৪ বছর বহু প্রতিশ্রুতি শুনেছে, পেয়েছে। তাই করবো না বলে এখনই করতে এগিয়ে আসুন। ক্ষমতায় গিয়ে যেটি করতে চান, সেটি ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই করার পরিবেশ ও মানসিকতা তৈরি করুন। ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার দল দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্য বজায় রাখার পক্ষে। দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন এখনই দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় আমরা সকল দল মিলে সম্মিলিত কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। এ ইস্যূ আমাদের প্রজন্মের অস্তিত্বের সাথে জড়িত, তাই আমরা যতটুকু কঠোর হওয়া দরকার, ততটুকুই হব ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে ধর্মীয় শিক্ষক পদ সৃজন করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে। তিনি আরও বলেন, আমরা কাউকে বঞ্চিত করতে পারবো না। সকলের বিষয় বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নিবো। আমরা যদি ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য ধরে রাখি তবে এদেশে আর কখনো ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি কিংবা উত্থান কোনটাই হবে না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জাতির জন্য আজকের এই সেমিনার অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সভ্য জাতি গঠনের জন্য প্রথম প্রয়োজন আদর্শিক ও নৈতিক  শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের চরিত্র গঠন করা। তিনি আরও বলেন, জাতি হিসেবে আমাদের দুর্ভাগ্য স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানাতে হচ্ছে। অথচ প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি। আমাদের ভিত্তিতেই নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টির জন্য ধর্মীয় শিক্ষক নেই। তিনি, সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার সহ সংস্কৃতির নামে সকল বেহায়াপনার নীতি বাতিলের দাবি জানিয়ে জাতীয় সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে একমত পোষণ করেন।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ইসলামের প্রথম নির্দেশ পড়। সেই পড়া রবের নামের পড়া। আল্লাহ নাম ছাড়া পড়ালেখা দুনিয়া কিংবা আখেরাত কোনটিই উন্নতি হয় না। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে আদর্শ ও নৈতিকতার শিক্ষা। বাল্যকালের শিক্ষা হচ্ছে মানুষ গড়ার ভিত্তি। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া না হলে হেফাজতে ইসলাম রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে। এসময় তিনি ইসকন নিষিদ্ধের দাবিও জানান। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ইসলাম নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দিন শেষ। এদেশে রাজনীতি করতে হলেও ইসলামের ধারক-বাহক আলেম ওলামাদের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আগামীতে যারাই ক্ষমতা আসবে তারা ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। ইসলাম শান্তির ধারক ও বাহক। আজকের জাতীয় সেমিনার সেই বার্তা দেয়। আমরা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজপথে না গিয়ে জাতীয় সেমিনারের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাবি উপস্থাপন করছি। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, হাসিনা তার ফ্যাসিজম টিকিয়ে রাখতে আমলা-কামলা সবাইকে প্রণোদনা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রণোদনা দিয়েছে জিপিএ ফাইভ। এই জিপিএ ফাইভের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ হারাতে হয়েছে। সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমেই মূলত হাসিনা তার ফ্যাসিস্ট শাসনামলকে দীর্ঘ করেছে। ভারতীয় অপসংস্কৃতি এদেশের ঘরে -ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে হাসিনা। দীর্ঘ ১৫/২০ বছর ধরে আমাদেরকে অসাম্প্রদায়িক বানানো হয়েছে। অথচ আমরা কেউই অসাম্প্রদায়িক নয়। বাংলাদেশে মুসলিমের সংখ্যা বেশি তাই মুসলিমদের দায়িত্বও বেশি। ভারত এদেশের ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বুঝাতে চেয়েছে হাসিনা ছাড়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদ নয়। কিন্তু আমরা ৫ আগস্ট পরবর্তী প্রমাণ করে দিয়েছি হাসিনা নয় আমাদের কাছেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদ।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ’র মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী, খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ড. আসিফ মাহতাব, শিক্ষক ও গবেষক ড. সরওয়ার হোসেন, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি জেনারেল ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ। এছাড়াও সেমিনারে দেশবরেণ্য ওলামা- মাশায়েখ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি সকল সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে জাতীয় সেমিনার

Update Time : ০২:৪৩:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫


দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি সকল সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিভিন্ন মত ও পথের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সমাজ প্রতিনিধি, লেখক, শিক্ষাবিদ, গবেষকসহ দেশের বৃহত্তর সব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তরা ‘দেশের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ’, ‘ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি কোনো বিষয় বা পাঠ্যবই দ্রুত পর্যালোচনা ও সংশোধন’, ‘নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষানীতি সংস্কারের রূপরেখা প্রণয়ন’, এবং ‘সকল ধরণের ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিপন্থি সিদ্ধান্ত বাতিল’-করার দাবি জানান। বক্তাদের আলোচনা-পর্যালোচনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে উত্থাপিত চারটি দাবিতে সকলে ঐকমত্য পোষণ করেন।

মুফতি রেজাউল করিম আবরারের পরিচালনায় জাতীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণ পরিষদ’র উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক সচিব ড. খ.ম কবিরুল ইসলাম। তাঁর উপস্থাপিত প্রবন্ধে প্রাথমিক শিক্ষায় নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অপরিসীম গুরুত্ব, শিক্ষাকর্মীর যোগ্যতার মানদণ্ড এবং পাঠ্যসূচিপুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়।

সেমিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেন, মহান আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব বলেছেন আবার শিয়াল – কুকুরের চেয়েও নিকৃষ্ট বলেছেন। তাই মানুষ হিসেবে নিজেদেকে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে গড়ে তুলতে হলে ইসলামের আদর্শের মূল্যবোধ ধারণ করতে হবে। তিনি বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্যের জবাবে বলেন, জাতি ৫৪ বছর বহু প্রতিশ্রুতি শুনেছে, পেয়েছে। তাই করবো না বলে এখনই করতে এগিয়ে আসুন। ক্ষমতায় গিয়ে যেটি করতে চান, সেটি ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই করার পরিবেশ ও মানসিকতা তৈরি করুন। ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার দল দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্য বজায় রাখার পক্ষে। দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন এখনই দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় আমরা সকল দল মিলে সম্মিলিত কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। এ ইস্যূ আমাদের প্রজন্মের অস্তিত্বের সাথে জড়িত, তাই আমরা যতটুকু কঠোর হওয়া দরকার, ততটুকুই হব ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে ধর্মীয় শিক্ষক পদ সৃজন করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে। তিনি আরও বলেন, আমরা কাউকে বঞ্চিত করতে পারবো না। সকলের বিষয় বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নিবো। আমরা যদি ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য ধরে রাখি তবে এদেশে আর কখনো ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি কিংবা উত্থান কোনটাই হবে না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জাতির জন্য আজকের এই সেমিনার অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সভ্য জাতি গঠনের জন্য প্রথম প্রয়োজন আদর্শিক ও নৈতিক  শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের চরিত্র গঠন করা। তিনি আরও বলেন, জাতি হিসেবে আমাদের দুর্ভাগ্য স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানাতে হচ্ছে। অথচ প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি। আমাদের ভিত্তিতেই নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টির জন্য ধর্মীয় শিক্ষক নেই। তিনি, সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার সহ সংস্কৃতির নামে সকল বেহায়াপনার নীতি বাতিলের দাবি জানিয়ে জাতীয় সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে একমত পোষণ করেন।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ইসলামের প্রথম নির্দেশ পড়। সেই পড়া রবের নামের পড়া। আল্লাহ নাম ছাড়া পড়ালেখা দুনিয়া কিংবা আখেরাত কোনটিই উন্নতি হয় না। ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে আদর্শ ও নৈতিকতার শিক্ষা। বাল্যকালের শিক্ষা হচ্ছে মানুষ গড়ার ভিত্তি। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া না হলে হেফাজতে ইসলাম রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে। এসময় তিনি ইসকন নিষিদ্ধের দাবিও জানান। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ইসলাম নিয়ে ছিনিমিনি খেলার দিন শেষ। এদেশে রাজনীতি করতে হলেও ইসলামের ধারক-বাহক আলেম ওলামাদের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আগামীতে যারাই ক্ষমতা আসবে তারা ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। ইসলাম শান্তির ধারক ও বাহক। আজকের জাতীয় সেমিনার সেই বার্তা দেয়। আমরা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজপথে না গিয়ে জাতীয় সেমিনারের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাবি উপস্থাপন করছি। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, হাসিনা তার ফ্যাসিজম টিকিয়ে রাখতে আমলা-কামলা সবাইকে প্রণোদনা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রণোদনা দিয়েছে জিপিএ ফাইভ। এই জিপিএ ফাইভের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ হারাতে হয়েছে। সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমেই মূলত হাসিনা তার ফ্যাসিস্ট শাসনামলকে দীর্ঘ করেছে। ভারতীয় অপসংস্কৃতি এদেশের ঘরে -ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে হাসিনা। দীর্ঘ ১৫/২০ বছর ধরে আমাদেরকে অসাম্প্রদায়িক বানানো হয়েছে। অথচ আমরা কেউই অসাম্প্রদায়িক নয়। বাংলাদেশে মুসলিমের সংখ্যা বেশি তাই মুসলিমদের দায়িত্বও বেশি। ভারত এদেশের ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বুঝাতে চেয়েছে হাসিনা ছাড়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদ নয়। কিন্তু আমরা ৫ আগস্ট পরবর্তী প্রমাণ করে দিয়েছি হাসিনা নয় আমাদের কাছেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদ।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ’র মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী, খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ড. আসিফ মাহতাব, শিক্ষক ও গবেষক ড. সরওয়ার হোসেন, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি জেনারেল ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ। এছাড়াও সেমিনারে দেশবরেণ্য ওলামা- মাশায়েখ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।