০৭:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

মাহেরিন চৌধুরীর সমাধিতে বিমান বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের শ্রদ্ধা 

Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৩৪:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
  • / ৫৭ Time View

মহিনুল ইসলাম সুজন,নীলফামারী প্রতিনিধি।।  বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০ শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করে নিজের জীবন উৎসর্গকারী নিহত সাহসী শিক্ষিকা মাহেরিন চৌধুরীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, নীলফামারী জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। বুধবার(২৩ জুলাই)রাতে নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার বগুলাগাড়ী গ্রামে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনের পক্ষ থেকে শিক্ষিকা মাহেরিন চৌধুরীর সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়।এসময় উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন মমিনুল ইসলাম,ওআইসি আনিছুজ্জামান,ওসি সি এন্ড এম ইউনিট লালমনিরহাট, জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)আরজু মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনসহ বিমান বাহিনীর জেসিও পদবির সিনিয়র কর্মকর্তারা।এর একইদিনের সকালে নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়াস্থ মরহুম শিক্ষিকার সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান ও পুলিশ সুপার(এসপি)এ.এফ.এম তারিক হোসেন খান।এসময় মরহুমা শিক্ষিকার স্বামী মনছুর আলী হেলাল, দুই সন্তান আয়ান রহীদ মিয়াদ চৌধুরী ও আদিল রহীদ মাহিব চৌধুরী, জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন, জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সমাধিস্থল জিয়ারত একমিনিট নিরবতা পালন ও শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করেন তারা।পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মরহুম মোহিতুর রহমান চৌধুরী ও ছাবেরা চৌধুরী দম্পতির বড় সন্তান মাহেরিন চৌধুরী। তারা দুই ভাই ও দুই বোন। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান এর মা মরহুম জাহানারা খাতুন ও মাহেরিনের দাদী মরহুম রওশনারা বেগম ছিলেন আপন দুই বোন। তার দাদা মরহুম মজিবর রহমান চৌধুরী ছিলেন এলাকার সুনামধন্য জমিদার। মরহুম মজিবর রহমান চৌধুরীর পিতা মাহফুজার রহমান চৌধুরী বগুলাগাড়ী স্কুলটি নির্মাণ করেছিলেন ১৮১৯ সালে। ১৯৭০ সালে তা বগুলাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ নামে স্থাপিত করেন মজিবর রহমান চৌধুরী।শিক্ষাজীবন শেষে মেহেরিন ২০০২ সালে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৮ সালে শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলার চর আত্রাই গ্রামের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার মনছুর হেলালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের রয়েছে দুই ছেলে সন্তান। এর মধ্যে বড় ছেলে আয়ান রহীদ মিয়াদ চৌধুরী ও-লেভেল শেষ করেছে। আর ছোট ছেলে আদিল রহীদ মাহিব চৌধুরী ও-লেভেল পরীক্ষা দেবে।

উল্লেখ্য: গত মঙ্গলবার(২২ জুলাই) বিকাল ৪টায় নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়াস্থ বগুলাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে মাহেরিন চৌধুরীকে দাফন করা হয়। এর আগে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের গজল আজম জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।এর আগে সোমবার(২১ জুলাই) রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল ভবনে বিধ্বস্ত হয়।এতে ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। কিন্তু তার আগেই ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বের হয়ে আসে মাহেরিন। কিন্তু ভিতরে আটকা পড়ে থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে তিনি ভিতরে ঢুকে পড়েন। তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জনকে আগুন থেকে উদ্ধার করেন মাহেরিন চৌধুরী। উদ্ধারে সময় তিনি দগ্ধ হন।পরে  জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

মাহেরিন চৌধুরীর সমাধিতে বিমান বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের শ্রদ্ধা 

Update Time : ০৩:৩৪:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

মহিনুল ইসলাম সুজন,নীলফামারী প্রতিনিধি।।  বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০ শিক্ষার্থীর প্রাণ রক্ষা করে নিজের জীবন উৎসর্গকারী নিহত সাহসী শিক্ষিকা মাহেরিন চৌধুরীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, নীলফামারী জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। বুধবার(২৩ জুলাই)রাতে নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার বগুলাগাড়ী গ্রামে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনের পক্ষ থেকে শিক্ষিকা মাহেরিন চৌধুরীর সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়।এসময় উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন মমিনুল ইসলাম,ওআইসি আনিছুজ্জামান,ওসি সি এন্ড এম ইউনিট লালমনিরহাট, জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)আরজু মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনসহ বিমান বাহিনীর জেসিও পদবির সিনিয়র কর্মকর্তারা।এর একইদিনের সকালে নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়াস্থ মরহুম শিক্ষিকার সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান ও পুলিশ সুপার(এসপি)এ.এফ.এম তারিক হোসেন খান।এসময় মরহুমা শিক্ষিকার স্বামী মনছুর আলী হেলাল, দুই সন্তান আয়ান রহীদ মিয়াদ চৌধুরী ও আদিল রহীদ মাহিব চৌধুরী, জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন, জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সমাধিস্থল জিয়ারত একমিনিট নিরবতা পালন ও শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করেন তারা।পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মরহুম মোহিতুর রহমান চৌধুরী ও ছাবেরা চৌধুরী দম্পতির বড় সন্তান মাহেরিন চৌধুরী। তারা দুই ভাই ও দুই বোন। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান এর মা মরহুম জাহানারা খাতুন ও মাহেরিনের দাদী মরহুম রওশনারা বেগম ছিলেন আপন দুই বোন। তার দাদা মরহুম মজিবর রহমান চৌধুরী ছিলেন এলাকার সুনামধন্য জমিদার। মরহুম মজিবর রহমান চৌধুরীর পিতা মাহফুজার রহমান চৌধুরী বগুলাগাড়ী স্কুলটি নির্মাণ করেছিলেন ১৮১৯ সালে। ১৯৭০ সালে তা বগুলাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ নামে স্থাপিত করেন মজিবর রহমান চৌধুরী।শিক্ষাজীবন শেষে মেহেরিন ২০০২ সালে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৮ সালে শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলার চর আত্রাই গ্রামের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার মনছুর হেলালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের রয়েছে দুই ছেলে সন্তান। এর মধ্যে বড় ছেলে আয়ান রহীদ মিয়াদ চৌধুরী ও-লেভেল শেষ করেছে। আর ছোট ছেলে আদিল রহীদ মাহিব চৌধুরী ও-লেভেল পরীক্ষা দেবে।

উল্লেখ্য: গত মঙ্গলবার(২২ জুলাই) বিকাল ৪টায় নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়াস্থ বগুলাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে মাহেরিন চৌধুরীকে দাফন করা হয়। এর আগে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের গজল আজম জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।এর আগে সোমবার(২১ জুলাই) রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল ভবনে বিধ্বস্ত হয়।এতে ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। কিন্তু তার আগেই ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বের হয়ে আসে মাহেরিন। কিন্তু ভিতরে আটকা পড়ে থাকা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে তিনি ভিতরে ঢুকে পড়েন। তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জনকে আগুন থেকে উদ্ধার করেন মাহেরিন চৌধুরী। উদ্ধারে সময় তিনি দগ্ধ হন।পরে  জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।