আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানীর প্রতি স্মৃতিচারণ

- Update Time : ১২:৩৬:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
- / ৭১ Time View
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সভাপতি স্বপন কুমার সাহা এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনছুর রহমান শেখ আজ এক যৌথ স্মৃতিচারণে আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তাঁদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মওলানা ভাসানীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৯৪৮ সালে যখন কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন, ঠিক সেই সময় মওলানা ভাসানী ঢাকার পাবলিক লাইব্রেরীতে তার সভাপতিত্বে ভাষা আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে নিয়ে আলোচনা করেন। এই আলোচনার মাধ্যমেই ১৯৪৮ সালে সর্বপ্রথম পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে আন্দোলনের সূচনা সৃষ্টি হয়। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী তখনই অনুধাবন করেন যে, রাজনৈতিক দল বা সংগঠন ছাড়া গণমানুষের দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। তাই তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন টিকাটুলির রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক হন।
তার স্মৃতিচারণে আরও বলা হয়, মওলানা ভাসানী সর্বদা গণমানুষের পক্ষে ছিলেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক ও মওলানা ভাসানীর ব্যানারে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন হয় এবং পূর্ব পাকিস্তানের বিজয় অর্জিত হয়। ঐ সময় ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামকরণ করা হয়। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহারের অন্যতম দাবি ছিল স্বায়ত্তশাসন।
১৯৫৫ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী একটি সেমিনারে বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে ৯৮ ভাগ স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তখন মওলানা ভাসানী এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লোভে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সোহরাওয়ার্দী এই ধরণের বক্তব্য বাঙালি জাতির কাছে প্রদান করেছেন।
মওলানা ভাসানী সঠিকভাবে অনুধাবন করেছিলেন যে, বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং যারা মসনদের লোভে শাসকের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। তাই তিনি ১৯৫৭ সালে তিন দিনব্যাপী কাগমারী সম্মেলনের আয়োজন করেন এবং সেখানে একটি ইঙ্গিত দেন যে, তিনি আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করবেন। ফলস্বরূপ, ১৯৫৭ সালের ২৬শে জুলাই রূপমহল সিনেমা হলে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠন করেন এবং নিজে সভাপতি হন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মওলানা ভাসানী শুধু একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আওয়ামী লীগ গংদের কারণে মওলানা ভাসানীর সঠিক ভূমিকা এবং ইতিহাসকে আড়াল করা হয়েছে। তাই আজ আমরা মনে করি, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ভূমিকাকে সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকসহ সকলের নৈতিক দায়িত্ব তাঁর সঠিক ইতিহাসকে তুলে ধরা।
মওলানা ভাসানী সকল সময়ে গণমানুষের পক্ষে ছিলেন। তিনি গণতন্ত্র, প্রগতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে ছিলেন। তাই আজকের ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতিচারণের জন্য সকলকে অবহিত করা হলো।
জয় হোক গণতন্ত্রের, বিজয় হোক জনগণের