০৫:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

একজন নক্ষত্র আলোক বর্তিকা এমাজউদ্দীন স্যার

Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
  • / ১১৩ Time View

মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি
উৎসর্গ: অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৭ জুলাই, নিঃশব্দে পার হলো বাংলাদেশের অন্যতম বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ এবং প্রশাসক অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ-এর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর মতো একজন চিন্তাবিদের প্রস্থান আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজচিন্তার জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করেছে।

রাষ্ট্রচিন্তায় পরিপক্ব, দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন রাজনৈতিক চিন্তার বহুমাত্রিক ধারার একজন শক্তিমান গবেষক। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি বিএনপিপন্থী সুধীসমাজের নেতৃত্বে ছিলেন, তবুও তাঁর উদার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সকল রাজনৈতিক মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
তিনি ভিন্নমতকে সমালোচনা করলেও তা বাতিল করতেন না— বরং যুক্তির টেবিলে এনে চিন্তার খোরাক জোগাতেন।

বিশ্লেষকদের মতে, তাঁকে কেবল রাজনৈতিক পরিচয়ের গণ্ডিতে আটকে মূল্যায়ন করা সঠিক নয়। তাঁর রাষ্ট্রবিজ্ঞান চর্চা, গবেষণা ও বক্তৃতা তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় স্থাপন করেছে।

উপাচার্য হিসেবে এক ব্যতিক্রমধর্মী অধ্যায়

১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। সেই সময় বিএনপি সরকার তাঁকে নিযুক্ত করলেও, তাঁর প্রশাসন পরিচালনা ছিল দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তাঁকে স্মরণ করে বলেন—

“উপাচার্য হিসেবে তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা ছিল চমকপ্রদ। তিনি মতের পার্থক্য থাকলেও সব মতকে শ্রদ্ধা করতেন। তাঁর বক্তৃতা ছিল সহজবোধ্য ও গভীর চিন্তাসমৃদ্ধ।”

ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ: একটি রক্তাক্ত অভিজ্ঞতা ও একজন শিক্ষক

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন চলাকালে তেজগাঁও শাহীনবাগ সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে আমি (লেখক) আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতে পুলিশের সামনে রক্তাক্ত হই।
জীবন বাঁচিয়ে ফার্মগেটের আল রাজী হাসপাতালে আশ্রয় নেই। সেখান থেকে অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, কবি আব্দুল হাই শিকদার ও আফরোজা আব্বাস আমাকে নিয়ে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ-সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ আমার ওপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানান।
এই মানবিক সহানুভূতি আজও আমার হৃদয়ে গভীর ছাপ রেখে গেছে। এমন ব্যক্তিত্ব আজকের বাংলাদেশে বড় বেশি অনুপস্থিত

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

One thought on “একজন নক্ষত্র আলোক বর্তিকা এমাজউদ্দীন স্যার

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

একজন নক্ষত্র আলোক বর্তিকা এমাজউদ্দীন স্যার

Update Time : ০৮:২৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি
উৎসর্গ: অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৭ জুলাই, নিঃশব্দে পার হলো বাংলাদেশের অন্যতম বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ এবং প্রশাসক অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ-এর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁর মতো একজন চিন্তাবিদের প্রস্থান আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজচিন্তার জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করেছে।

রাষ্ট্রচিন্তায় পরিপক্ব, দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন রাজনৈতিক চিন্তার বহুমাত্রিক ধারার একজন শক্তিমান গবেষক। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি বিএনপিপন্থী সুধীসমাজের নেতৃত্বে ছিলেন, তবুও তাঁর উদার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সকল রাজনৈতিক মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
তিনি ভিন্নমতকে সমালোচনা করলেও তা বাতিল করতেন না— বরং যুক্তির টেবিলে এনে চিন্তার খোরাক জোগাতেন।

বিশ্লেষকদের মতে, তাঁকে কেবল রাজনৈতিক পরিচয়ের গণ্ডিতে আটকে মূল্যায়ন করা সঠিক নয়। তাঁর রাষ্ট্রবিজ্ঞান চর্চা, গবেষণা ও বক্তৃতা তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় স্থাপন করেছে।

উপাচার্য হিসেবে এক ব্যতিক্রমধর্মী অধ্যায়

১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। সেই সময় বিএনপি সরকার তাঁকে নিযুক্ত করলেও, তাঁর প্রশাসন পরিচালনা ছিল দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তাঁকে স্মরণ করে বলেন—

“উপাচার্য হিসেবে তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা ছিল চমকপ্রদ। তিনি মতের পার্থক্য থাকলেও সব মতকে শ্রদ্ধা করতেন। তাঁর বক্তৃতা ছিল সহজবোধ্য ও গভীর চিন্তাসমৃদ্ধ।”

ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ: একটি রক্তাক্ত অভিজ্ঞতা ও একজন শিক্ষক

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন চলাকালে তেজগাঁও শাহীনবাগ সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে আমি (লেখক) আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতে পুলিশের সামনে রক্তাক্ত হই।
জীবন বাঁচিয়ে ফার্মগেটের আল রাজী হাসপাতালে আশ্রয় নেই। সেখান থেকে অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, কবি আব্দুল হাই শিকদার ও আফরোজা আব্বাস আমাকে নিয়ে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ-সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ আমার ওপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানান।
এই মানবিক সহানুভূতি আজও আমার হৃদয়ে গভীর ছাপ রেখে গেছে। এমন ব্যক্তিত্ব আজকের বাংলাদেশে বড় বেশি অনুপস্থিত