সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত নয়

- Update Time : ১১:১৯:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
- / ১৮০ Time View
।। এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।।
মহান রক্তক্ষয়ি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক, জাতীয় গৌরব। আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রক্ষক। সশস্ত্র বাহিনী আমাদের অহংকার ও গৌরবের প্রতিষ্ঠান। আর তাই এই সশস্ত্র বাহিনীকে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব। যদি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে বিতর্কিত করা হয়, হেয় প্রতিপন্ন করা হয় তাহলে আমাদের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা হুমকির মুখে পড়তে পারে। বিপন্ন হতে পারে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জনগন। সবাইকে মনে রাখতে হবে সবার আগে দেশ।
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ করছি বাংলাদেশের গৌরবের প্রতীক, আমাদের অস্তিত্বের স্মারক সশস্ত্র বাহিনীকে নানাভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় সশস্রবাহিকে নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। য়া উদ্বেগজনক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি নানা রকমভাবে সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে নানা রকম মন্তব্য করছে, বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে বুঝে না বুঝে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনী, বিশেষ করে সেনাবাহিনীকে নিয়ে অনভিপ্রেত চর্চা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর মর্যাদা ক্ষুণ্নের শামিল। এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে সশস্ত্র বাহিনীকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী প্রধানসহ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা রকম সত্য-মিথ্যা বিষোদগার করে রীতিমতো তর্কযুদ্ধ অনাকাঙ্ক্ষিত, অগ্রহণযোগ্য ও অনভিপ্রেত।
দেরিতে হলেও আমরা ফ্যাসিবাদী শাসকের শাসন থেকে থেকে মুক্তি পেয়েছি। কিন্তু, ফ্যাসীবাদের শাসনামলে যে ক্ষতি তারা করে গেছে, আমাদের সেনাবাহিনীর তা কাটিয়ে উঠতে বহু সময়ের প্রয়োজন হবে। তবে আশার কথা হলো, আমাদের সেনাবাহিনীর বেশির ভাগ সদস্য দেশপ্রেমিক ও পেশাদার। যার কারণে ফ্যাসিবাদী শাসকের পক্ষে না দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনী দেশ-জাতির কল্যাণে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থান নেয়। কাজেই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত ক্রান্তিকাল কাটিয়ে সেনাবাহিনী তার আগের মর্যাদা ও গৌরবের জায়গায় পৌঁছতে হবে।
সেনাবাহিনী হয়তো বর্তমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছে। কিন্তু জুলাই বিপ্লবের পর এখন নানা রকম ‘ব্লেম গেম’ শুরু হয়েছে, যেখানে সশস্ত্র বাহিনীকে বিতর্কিত করার গভীর ষড়যন্ত্র লক্ষ করা যাচ্ছে। সমাজ মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে মনগড়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বিবিসিতে একটি সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে কিছু অযাচিত, অনভিপ্রেত এবং তাঁর দায়িত্বের বাইরে কথা বলেছেন। এ বক্তব্যগুলো কখনোই কাম্য নয়, কাঙ্ক্ষিত নয়। এসব বক্তব্য কখনোই রাষ্ট্রের জন্য শুভ নয়। ভলকার তুর্ক তাঁর ম্যান্ডেটের বাইরে গিয়ে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়াটাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা খুবই কঠিন। তিনি কেন এবং কোন প্রেক্ষাপটে এ ধরনের কথা বলছেন সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু ৭ মার্চ বিবিসির ‘হার্ডটক’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে যে মন্তব্য তিনি করেছেন, তা তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে মনে করেন না আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। কারণ, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী একটি ‘চেইন অব কমান্ড’-এর মধ্যে চলে। জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারও একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এবং পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচালিত হন।
সশস্রবাহিনীকে নিয়ে চলমান তর্কযুদ্ধ কখনোই দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এই ধরনের বিতর্ক আমাদের জাতীয় ঐক্যকে শুধু বিনষ্ট করবে না, আমাদের সার্বভৌমত্বকেও হুমকির মুখে ফেলবে। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী একটি পেশাদার চৌকস বাহিনী হিসেবে সারা বিশ্বে সমাদৃত, পরিচিত। এই তো কয়েক দিন আগে গত অক্টোবরে সেন্ট্রাল আফ্রিকার বিদ্রোহী দমনে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডাররা গেলেন। সেখানে তাঁরা এক অসাধারণ অভিযানের মাধ্যমে বিদ্রোহ দমন করলেন।
অতিতেও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার হয়েছে। পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় একটি মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ‘কার্ল সিওভাক্কো’ নামে এক ব্যক্তির সাথে যৌথভাবে হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউ