০৭:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শিল্প উপদেষ্টার ভোলার মইষা দধির স্বীকৃতি সনদ প্রদান

Reporter Name
- Update Time : ০৩:০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
- / ৩০৯ Time View
মোঃ আবুল কাশেম, জেলা প্রতিনিধি : জিআই পণ্যের স্বীকৃতিতে ভোলার মইষা দুধ ও দই প্রক্রিয়াজাতকারী ব্যসায়ীদের মনে আনন্দ বেড়েছে। তাদের ব্যবসায়িক পরিধি বিস্তারের জন্য শিল্প মন্ত্রনালয়ের স্বীকৃতি পাওয়ায় মহিষের দুধ ও দধির ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতে ও ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধিতে আর

কোন আইনগত বাধা থাকবে না। মইষা দুধ ও দধি এখন শিল্প পন্য। জিওগ্রাফিকাল আইডেনটিফিকেশন (জিআই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় ভোলার ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী খাবার মহিষের দুধের কাঁচা টক দধি ‘মইষা দই’ আর অবহেলিত পন্য নয়। বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্ব মেধা সম্পদ দিবস ২০২৫ইং এর আলোচনা সভায় শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের হাত থেকে এ স্বীকৃতি সনদ গ্রহণ করেন ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান। এর আগে ২০২৩ ইং সালের ১৯ ডিসেম্বর ভোলা জেলা প্রশাসকের আবেদনের পরিপেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তরের ৫৫টি জিআই পণ্যের মধ্যে ২৯ নম্বর শ্রেণিতে ব্রান্ডিং পণ্যের স্বীকৃতি পায় দ্বীপ জেলার ঐতিহ্যবাহী খাবারটি। জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে,

মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীর ভেতর গড়ে ওঠা ছোট-বড় প্রায় ৩২টি চরে বর্তমানে ১ লাখ ২৪ হাজারেরও বেশি মহিষ লালন-পালন করছেন খামারিরা। এসব খামার থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪০ টন দুধ উৎপাদন হয়। এসব দুধ আকার ভেদে মাটির হাড়িতে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা রেখে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে দই তৈরি করেন ব্যবসায়ীরা। তারা প্রতি কেজি দই বিক্রি করেন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। এখানকার সামাজিক পারিবারিক ও ঘরোয়া ভোজে মইষা দুধের দধি না থাকলে এসব আয়োজনের পূর্ণতা পায় না। খাবার হজমে সহায়তা করায় ভোলার মইষা দইয়ের জনপ্রিয়তা রয়েছে দেশব্যাপী। বরিশাল বিভাগের প্রানের টুকরা খ্যাত ভোলায় প্রায় আড়াই শত বছর ধরে মহিষের দুধ ও দধি উৎপাদন প্রক্রিয়া চলমান আছে। কিন্তু এই পন্যটি বাজারজাত করার প্রয়োজনী সরকারী অনুমোদনের অভাবে দীর্ঘ্য আড়াই শত বছর যাবত ভোলাইয়া মইষা দুধ-দধি বাজারজাত হতে পারত না। গেল মাসেও চরফ্যাসনের শাহেদ আলী তার দধির বাজার মন্দার কারনে ও দধি বাজারজাত করতে না পারার কারনে সাংবাদিকদের নিকট আক্ষেপ করেছিলেন। শিল্প মন্ত্রনালয়ের জিআই সনদ প্রদানের কারনে তার আক্ষেপ আর থাকবে না। ভোলার রইপুর, বিজিপুর, রামরামপুর, বিশারামপুর, কৃষ্ঞচন্দ্র দাপিয়ে বেড়ানো মইষা দুধ উৎপাদনকারীরা বর্তমানে দুনিয়াতে জীবিত না থাকলেও মাননীয় শিল্প উপদেষ্টার প্রদত্ত জিআই সনদ তাদের আত্মার উপর শান্তি বর্ষন করবে। ভোলা শহরের মইষা দই বিক্রেতা মো. সেলিম ও ইসলাম বলেন, প্রায় ৩৫ বছর ধরে মইষা দইয়ের ব্যবসা করি। দধি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে, এতে আমরা খুশি। ব্যবসার পরিধি আরও বাড়াবো। ভোলা জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম সাপ্তাহিক মুক্ত কলম সংবাদের সাংবাদিককে পেয়ে বলেন, এ সনদ প্রাপ্তি ভোলাবাসীর জন্য আনন্দের। ভোলা জেলা প্রশাসক দীর্ঘদিন ধরে মহিষের দইকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি ভূক্তির জন্য চেষ্টা করেছেন। আমরা ও দুধ-দধি শিল্পে জড়িতরা তাঁর মঙ্গল কামনা করি। তিনি আরও বলেন, দধি হয় দুধ থেকে, মহিষের দুধের উৎপাদন বাড়াতে মহিষের সংখ্যা বাড়াতে হবে। মহিষ সুস্থ-সবল রাখতে খামারিদের আমরা সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছি, একই সঙ্গে মহিষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে ভেক্সিনেশনও করা হচ্ছে। এদিকে ভোলার ঐতিহ্যবাহী মইষা দই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি প্রাপ্তির খবরে আনন্দিত ভোলার দুধ-দধি শিল্পের মানুষ। ভোলার দুধ-দধি ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাজারেও যেতে পারবে।
Tag :