রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজার ৭২তম জন্মজয়ন্তী আজ
- Update Time : ০৪:০৮:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৪১ Time View

মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি ও আদর্শে এক আলোকবর্তিকা
ঢাকা, ১০ অক্টোবর ২০২৫ (শুক্রবার):
আজ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)-এর চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজার ৭২তম জন্মজয়ন্তী।
১৯৫৩ সালের ১০ অক্টোবর পাবনা জেলার সুজানগর থানার মুরারিপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পিতা প্রয়াত খোন্দকার মুর্শিদুল হোসেন এবং মাতা প্রয়াত সালেহা মুর্শিদ ছিলেন সমাজে সৎচরিত্র, শিক্ষানুরাগ ও মানবিকতার প্রতীক।
মুক্তিযুদ্ধের সাহসী যোদ্ধা
কৈশোরেই তিনি স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তরুণ বয়সে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। মাতৃভূমির মুক্তির জন্য জীবন বাজি রাখা এই তরুণ যোদ্ধা যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্রগঠন, রাজনীতি ও সমাজবিকাশের চেতনায় নিজেকে নিবেদিত করেন।
শিক্ষা ও চিন্তার বিকাশ
স্বাধীনতার পর তিনি ১৯৭২ সালে ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন এবং পরবর্তীতে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি সমাজতন্ত্র, মানবিকতা ও গণতন্ত্রের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে পড়েন।
জাসদ ছাত্রলীগ থেকে জাতীয় রাজনীতিতে
সত্তরের দশকের গোড়ার দিকে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের উত্থানের সময় তিনি যুক্ত হন জাসদ সমর্থিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগে।
১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মহসিন হল শাখা জাসদ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
দেশ ও সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্রণী কর্মী। আন্দোলন–সংগ্রামে পাঁচবার কারাবরণ করেন তিনি— যা তাঁর আদর্শিক দৃঢ়তা ও নীতিনিষ্ঠার সাক্ষ্য বহন করে।
এনডিপি প্রতিষ্ঠা ও নেতৃত্বের পথচলা
১৯৮৯ সালে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনীতিক আনোয়ার জাহিদ- এবং শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা ছিলেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান।
১৯৯০ সালে আনোয়ার জাহিদ দল থেকে পদত্যাগ করলে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন এবং পরবর্তীতে দলীয় কাউন্সিলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
তিনি ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা–২ আসনে এনডিপির বাঘ প্রতীক নিয়ে প্রার্থীতা করেন, যেখানে তাঁর জনপ্রিয়তা তৃণমূল রাজনীতির দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করে।
২০০৬ সালের এনডিপি কাউন্সিলে পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে এখনো দলকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
নীতিনিষ্ঠ, কর্মনিষ্ঠ ও আদর্শভিত্তিক রাজনীতির দৃষ্টান্ত
খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা সবসময় বলেছেন—
“রাজনীতি অর্থের নয়, আদর্শ ও মানুষের বিশ্বাসের লড়াই। রাজনীতি হতে হবে সেবার, ত্যাগের এবং মূল্যবোধের।”
তাঁর নেতৃত্বে এনডিপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এমন এক দল হিসেবে, যা অর্থায়ন নয়, কর্মে বিশ্বাসী।
তিনি রাজনীতিতে সততা, অধ্যবসায় ও নৈতিকতার চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে একজন আদর্শ রাজনীতিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের অগ্রসৈনিক
তিনি ১/১১ সামরিক শাসিত সরকারের আমলে অন্যায়ভাবে কারাবন্দী হন, তবুও গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান থেকে সরেননি।
ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী এই নেতা সর্বদা বলেন—
> “সত্য রাজনীতি হলো ন্যায়, মানবতা ও বিশ্বাসের সম্মিলিত শক্তি।”
শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা এক বিবৃতিতে বলেছেন—
“ জননেতা খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা শুধু এনডিপির নয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক জীবন্ত ইতিহাস। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাষ্ট্রচিন্তা ও নৈতিক রাজনীতির সমন্বিত প্রতীক। তাঁর চিন্তা, প্রজ্ঞা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের অনুপ্রেরণা।”
তিনি দলের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যানের দীর্ঘায়ু, সুস্বাস্থ্য ও অব্যাহত নেতৃত্বের সফলতা কামনা করেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, মুক্তিযোদ্ধা, জাসদ ছাত্রনেতা ও আদর্শিক রাজনীতির ধারক খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা আজও বাংলাদেশের চিন্তা ও রাজনীতির জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।
তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় নতুন প্রজন্মের কাছে সাহস, সততা ও প্রজ্ঞার অনন্ত প্রেরণা হয়ে থাকবে।























