০১:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

রাজাপুরের সোহাগ জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসকের ভুল রিপোর্ট ও চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ, জমজ অপর নবজাতক-মা আইসিউতে, থানায় অভিযোগ দায়ের

Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৩ Time View
 বিশেষ প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির রাজাপুরের সোহাগ জেনারেল হাসপাতাল  এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুল রিপোর্ট ও কর্মরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় জমজ নবজাতক সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে সংক্ষুদ্ধ ভুক্তভোগী নবজাতকের পিতা রাজাপুর উপজেলার উত্তর বাগড়ি গ্রামের দিনমজুর মোঃ উজ্জল খান রাজাপুর থানায় সোহাগ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ও চেয়ারম্যান আহসান হাবিব সোহাগের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে বরিশাল শেবাচিমে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়। বর্তমানে জমজ অপর নবজাতক ও তার মা মোসাঃ নুপুর খাতুন (২৯) বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। থানায় দায়ের করা অভিযোগে দিনমজুর মোঃ উজ্জল খান জানান, তার স্ত্রী মোসাঃ নুপুর খাতুন (২৯) গর্ভবতী অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৭ জুলাই প্রথম তাকে সোহাগ ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। প্রথমে এমএইচ নাঈম নামের এক ব্যক্তি আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে শিশুর পরিবারকে জানান যে, গর্ভস্থ শিশু উল্টো অবস্থানে রয়েছে এবং কিছু ওষুধ দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে ৩১ আগস্ট আবার সোহাগ ক্লিনিকে নিয়ে গেলে ডা. এম. ডি. এইচ শরীফ ভূঁইয়া পুনরায় আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে তাদের জানান, বাচ্চার ওজন কম। তিনিও ওষুধ দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর ও ৮ সেপ্টেম্বর তারিখে অসুস্থ অবস্থায় সোহাগ ক্লিনিকে গেলে চিকিৎসক ডা. ফারহানা আফরিন সারাহ তাদের জানান, রোগীকে ক্লিনিকে ভর্তি করিয়ে সিজার করতে হবে জানিয়ে ইনজেকশন ও স্যালাইনসহ বিভিন্ন ঔষধ দিলে রোগী প্রচন্ড ব্যাথায় কাতরালে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বরিশাল মেডিকেলে নেওয়ার পর ৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৬টা ৫০ মিনিটে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জমজ সন্তানের জন্ম হয়। তবে নবজাতকদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই যমজ  নবজাতকের একজনের মৃত্যু হয়। কিন্তু সোহাগ ক্লিনিকের রির্পোটে একজন শিশু এবং নভেম্বরে ডেলিভারীর কথা জানানো হয়েছিলো। রোগীর পেটে জমজ বাচ্চা ছিলো। কিন্তু রিপোর্টে সেটা আসেনি। তাদের এই ভুল রিপোট ও অপচিকিৎসার কারণেই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্য শিশু ও তার মা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন, এ ঘটনার বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। ঘটনার পর রাজাপুরে ফিরে উজ্জল খান সোহাগ ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে গালাগাল ও হুমকি প্রদান করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। থানার অভিযোগে আরও বলা হয়, সোহাগ হুমকি দিয়ে তাদের বলেন, এই নিয়ে বেশি ঘাটাঘাটি করলে তোমার বা তোমার পরিবারের বড় ক্ষতি হবে। এ ঘটনার পর থেকে তারা উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় রয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবার সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। সোহাগ জেনারেল হাসপাতাল  এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আহসান হাবিব সোহাগ বলেন, এ ঘটনায় ক্লিনিকের স্টাফ বা চিকিৎসক যেই জড়িত হোক কিনা, সেটা তদন্তে ধরা পরার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তার ক্লিনিকে ওই চিকিৎসক আগামীকাল আসবে জানিয়ে ওই পরিবারের লোকজনকে আগামীকাল আসতে বলা হয়েছে কিন্তু তারা গিয়ে আমার নামে থানায় অভিযোগ করেছে। তিনি জানান, এখানে চিকিৎসার কি ভুল হয়েছে? ব্যাথার জন্য ব্যাথার ঔষধ দেয়া হয়েছে। এখানে সোহাগ ক্লিনিকের কি ভুল? ভুল হলে চিকিৎসকের বা স্টাফের ভুল হতে পারে, সেটাও তদন্তের বিষয়। ৭ মাসে ডেলিভারি হয়েছে, এ কারনে মারা যেতে পারে, এখানে চিকিৎসার কি ভুল হয়েছে ? তিনি আরও বলেন, তারা আমার কাছে এসে বিষয়টি জানালে ওই ডাক্তার আগামী কালকে আসবে তাই তাদের আগামীকাল আসতে বলেছিলাম কিন্ত তারা গিয়ে থানায় অভিযোগ করেছে। রাজাপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়েছেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

রাজাপুরের সোহাগ জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসকের ভুল রিপোর্ট ও চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ, জমজ অপর নবজাতক-মা আইসিউতে, থানায় অভিযোগ দায়ের

Update Time : ০৪:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
 বিশেষ প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির রাজাপুরের সোহাগ জেনারেল হাসপাতাল  এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুল রিপোর্ট ও কর্মরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় জমজ নবজাতক সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে সংক্ষুদ্ধ ভুক্তভোগী নবজাতকের পিতা রাজাপুর উপজেলার উত্তর বাগড়ি গ্রামের দিনমজুর মোঃ উজ্জল খান রাজাপুর থানায় সোহাগ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ও চেয়ারম্যান আহসান হাবিব সোহাগের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে বরিশাল শেবাচিমে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়। বর্তমানে জমজ অপর নবজাতক ও তার মা মোসাঃ নুপুর খাতুন (২৯) বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। থানায় দায়ের করা অভিযোগে দিনমজুর মোঃ উজ্জল খান জানান, তার স্ত্রী মোসাঃ নুপুর খাতুন (২৯) গর্ভবতী অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৭ জুলাই প্রথম তাকে সোহাগ ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। প্রথমে এমএইচ নাঈম নামের এক ব্যক্তি আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে শিশুর পরিবারকে জানান যে, গর্ভস্থ শিশু উল্টো অবস্থানে রয়েছে এবং কিছু ওষুধ দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে ৩১ আগস্ট আবার সোহাগ ক্লিনিকে নিয়ে গেলে ডা. এম. ডি. এইচ শরীফ ভূঁইয়া পুনরায় আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে তাদের জানান, বাচ্চার ওজন কম। তিনিও ওষুধ দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর ৩ সেপ্টেম্বর ও ৮ সেপ্টেম্বর তারিখে অসুস্থ অবস্থায় সোহাগ ক্লিনিকে গেলে চিকিৎসক ডা. ফারহানা আফরিন সারাহ তাদের জানান, রোগীকে ক্লিনিকে ভর্তি করিয়ে সিজার করতে হবে জানিয়ে ইনজেকশন ও স্যালাইনসহ বিভিন্ন ঔষধ দিলে রোগী প্রচন্ড ব্যাথায় কাতরালে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বরিশাল মেডিকেলে নেওয়ার পর ৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৬টা ৫০ মিনিটে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জমজ সন্তানের জন্ম হয়। তবে নবজাতকদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই যমজ  নবজাতকের একজনের মৃত্যু হয়। কিন্তু সোহাগ ক্লিনিকের রির্পোটে একজন শিশু এবং নভেম্বরে ডেলিভারীর কথা জানানো হয়েছিলো। রোগীর পেটে জমজ বাচ্চা ছিলো। কিন্তু রিপোর্টে সেটা আসেনি। তাদের এই ভুল রিপোট ও অপচিকিৎসার কারণেই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্য শিশু ও তার মা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন, এ ঘটনার বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগীর পরিবার। ঘটনার পর রাজাপুরে ফিরে উজ্জল খান সোহাগ ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে গালাগাল ও হুমকি প্রদান করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। থানার অভিযোগে আরও বলা হয়, সোহাগ হুমকি দিয়ে তাদের বলেন, এই নিয়ে বেশি ঘাটাঘাটি করলে তোমার বা তোমার পরিবারের বড় ক্ষতি হবে। এ ঘটনার পর থেকে তারা উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় রয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবার সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। সোহাগ জেনারেল হাসপাতাল  এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আহসান হাবিব সোহাগ বলেন, এ ঘটনায় ক্লিনিকের স্টাফ বা চিকিৎসক যেই জড়িত হোক কিনা, সেটা তদন্তে ধরা পরার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তার ক্লিনিকে ওই চিকিৎসক আগামীকাল আসবে জানিয়ে ওই পরিবারের লোকজনকে আগামীকাল আসতে বলা হয়েছে কিন্তু তারা গিয়ে আমার নামে থানায় অভিযোগ করেছে। তিনি জানান, এখানে চিকিৎসার কি ভুল হয়েছে? ব্যাথার জন্য ব্যাথার ঔষধ দেয়া হয়েছে। এখানে সোহাগ ক্লিনিকের কি ভুল? ভুল হলে চিকিৎসকের বা স্টাফের ভুল হতে পারে, সেটাও তদন্তের বিষয়। ৭ মাসে ডেলিভারি হয়েছে, এ কারনে মারা যেতে পারে, এখানে চিকিৎসার কি ভুল হয়েছে ? তিনি আরও বলেন, তারা আমার কাছে এসে বিষয়টি জানালে ওই ডাক্তার আগামী কালকে আসবে তাই তাদের আগামীকাল আসতে বলেছিলাম কিন্ত তারা গিয়ে থানায় অভিযোগ করেছে। রাজাপুর থানার ওসি ইসমাইল হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়েছেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।