০১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক: এক কিংবদন্তী জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী

Reporter Name
  • Update Time : ১২:৩৪:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৬৪ Time View
আনিছুর রহমান 
নিজস্ব প্রতিবেদক (চট্টগ্রাম):
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে যে কয়েকটি নাম চিরভাস্বর হয়ে আছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী। ১ সেপ্টেম্বর ১৯১৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সালে প্রয়াত এই বীর সেনাপতি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সেনাপ্রধান এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রথম চার তারকা বিশিষ্ট জেনারেল। তাঁর নেতৃত্ব ও সামরিক কৌশল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ত্বরান্বিত করেছিল।
সিলেটে জন্মগ্রহণকারী এম. এ. জি. ওসমানী ব্রিটিশ ভারতের সামরিক একাডেমি থেকে শিক্ষা লাভ করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি কর্নেল পদে অবসর গ্রহণ করেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার পর তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দেন।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার (মুজিবনগর সরকার) জেনারেল ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়। এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি দেশের অভ্যন্তরে গঠিত বিভিন্ন গেরিলা দল ও সেক্টরগুলোকে একত্রিত করে একটি সুসংগঠিত বাহিনী গড়ে তোলেন। তাঁর নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সফলভাবে প্রতিরোধ ও আক্রমণ পরিচালনা করে। সামরিক কৌশল নির্ধারণ, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং সেক্টর কমান্ডারদের সঙ্গে সমন্বয় সাধনে তাঁর ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে চূড়ান্ত বিজয়ের পর জেনারেল ওসমানী স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রথম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা এবং দেশপ্রেম তাকে জাতির কাছে একজন আদর্শ নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। পরবর্তীতে তিনি বেসামরিক জীবনে প্রবেশ করে সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী হিসেবেও দেশের সেবা করেছেন।
জেনারেল ওসমানী কেবল একজন সামরিক নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাঁর নেতৃত্ব, সাহস এবং দেশপ্রেম বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয় এবং তিনি চিরকাল জাতির হৃদয়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার আসনে অধিষ্ঠিত থাকবেন।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক: এক কিংবদন্তী জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী

Update Time : ১২:৩৪:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আনিছুর রহমান 
নিজস্ব প্রতিবেদক (চট্টগ্রাম):
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে যে কয়েকটি নাম চিরভাস্বর হয়ে আছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী। ১ সেপ্টেম্বর ১৯১৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সালে প্রয়াত এই বীর সেনাপতি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সেনাপ্রধান এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রথম চার তারকা বিশিষ্ট জেনারেল। তাঁর নেতৃত্ব ও সামরিক কৌশল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ত্বরান্বিত করেছিল।
সিলেটে জন্মগ্রহণকারী এম. এ. জি. ওসমানী ব্রিটিশ ভারতের সামরিক একাডেমি থেকে শিক্ষা লাভ করে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি কর্নেল পদে অবসর গ্রহণ করেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার পর তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দেন।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে গঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার (মুজিবনগর সরকার) জেনারেল ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়। এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি দেশের অভ্যন্তরে গঠিত বিভিন্ন গেরিলা দল ও সেক্টরগুলোকে একত্রিত করে একটি সুসংগঠিত বাহিনী গড়ে তোলেন। তাঁর নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সফলভাবে প্রতিরোধ ও আক্রমণ পরিচালনা করে। সামরিক কৌশল নির্ধারণ, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং সেক্টর কমান্ডারদের সঙ্গে সমন্বয় সাধনে তাঁর ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে চূড়ান্ত বিজয়ের পর জেনারেল ওসমানী স্বাধীন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রথম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা এবং দেশপ্রেম তাকে জাতির কাছে একজন আদর্শ নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। পরবর্তীতে তিনি বেসামরিক জীবনে প্রবেশ করে সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী হিসেবেও দেশের সেবা করেছেন।
জেনারেল ওসমানী কেবল একজন সামরিক নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তাঁর নেতৃত্ব, সাহস এবং দেশপ্রেম বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয় এবং তিনি চিরকাল জাতির হৃদয়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার আসনে অধিষ্ঠিত থাকবেন।