০১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

মাঠ সংকটে বাংলাদেশের খেলাধুলা, ভবিষ্যৎ কি?

Reporter Name
  • Update Time : ১২:৩২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১৪০ Time View
আনিছুর রহমান ,নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের খেলাধুলার ভবিষ্যৎ এখন এক অনিশ্চিত সময়ের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। শহরাঞ্চলে খেলার মাঠের সংকট দিন দিন বেড়েই চলেছে। একসময় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় যেসব উন্মুক্ত খেলার মাঠ ছিল, সেগুলো এখন হয় বহুতল ভবন, নয়তো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের দখলে চলে যাচ্ছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামের চিত্রও প্রায় একই রকম। কৃষিজমি ও জলাধার ভরাট করে সেখানে তৈরি হচ্ছে আবাসন বা শিল্পকারখানা। ফলে কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের খেলাধুলার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা কমে আসছে।
অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জনসংখ্যার চাপ এবং বাণিজ্যিক স্বার্থের কারণে খেলার মাঠ ভরাট হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বা স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে প্রভাবশালীরা মাঠ দখল করে৯ নিচ্ছে। এতে করে নতুন প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পথ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। খেলাধুলার সুযোগ না থাকায় তরুণরা ধীরে ধীরে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে।
খেলার মাঠের অভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ের খেলোয়াড়রা। যেসব কিশোর-কিশোরী খেলাধুলায় আগ্রহী, তাদের অনুশীলনের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ নেই। ফলে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়ও সঠিক পরিচর্যার অভাবে ঝরে পড়ছে। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।
খেলাধুলার এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। বিদ্যমান খেলার মাঠগুলো রক্ষা করা এবং নতুন খেলার মাঠ তৈরির ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। মাঠ ভরাট বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে, প্রতিটি এলাকায় খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ করা উচিত, যাতে নতুন প্রজন্ম সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়নই কোনো দেশের প্রগতির একমাত্র মাপকাঠি নয়। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার মতো বিষয়গুলোও সমান গুরুত্বপূর্ণ। খেলার মাঠগুলো রক্ষা করা গেলে তা শুধু খেলোয়াড় তৈরিই করবে না, বরং একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজ গঠনেও সহায়তা করবে।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

মাঠ সংকটে বাংলাদেশের খেলাধুলা, ভবিষ্যৎ কি?

Update Time : ১২:৩২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আনিছুর রহমান ,নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের খেলাধুলার ভবিষ্যৎ এখন এক অনিশ্চিত সময়ের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। শহরাঞ্চলে খেলার মাঠের সংকট দিন দিন বেড়েই চলেছে। একসময় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় যেসব উন্মুক্ত খেলার মাঠ ছিল, সেগুলো এখন হয় বহুতল ভবন, নয়তো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের দখলে চলে যাচ্ছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামের চিত্রও প্রায় একই রকম। কৃষিজমি ও জলাধার ভরাট করে সেখানে তৈরি হচ্ছে আবাসন বা শিল্পকারখানা। ফলে কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের খেলাধুলার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা কমে আসছে।
অপরিকল্পিত নগরায়ণ, জনসংখ্যার চাপ এবং বাণিজ্যিক স্বার্থের কারণে খেলার মাঠ ভরাট হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বা স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগ নিয়ে প্রভাবশালীরা মাঠ দখল করে৯ নিচ্ছে। এতে করে নতুন প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পথ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। খেলাধুলার সুযোগ না থাকায় তরুণরা ধীরে ধীরে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে।
খেলার মাঠের অভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ের খেলোয়াড়রা। যেসব কিশোর-কিশোরী খেলাধুলায় আগ্রহী, তাদের অনুশীলনের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ নেই। ফলে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়ও সঠিক পরিচর্যার অভাবে ঝরে পড়ছে। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।
খেলাধুলার এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। বিদ্যমান খেলার মাঠগুলো রক্ষা করা এবং নতুন খেলার মাঠ তৈরির ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। মাঠ ভরাট বন্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে, প্রতিটি এলাকায় খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ করা উচিত, যাতে নতুন প্রজন্ম সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়নই কোনো দেশের প্রগতির একমাত্র মাপকাঠি নয়। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার মতো বিষয়গুলোও সমান গুরুত্বপূর্ণ। খেলার মাঠগুলো রক্ষা করা গেলে তা শুধু খেলোয়াড় তৈরিই করবে না, বরং একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজ গঠনেও সহায়তা করবে।