বাঙালি মুসলিমের ১৯৭১’য়ের অর্জন

- Update Time : ০২:২০:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
- / ১২৮ Time View
ফিরোজ মাহবুব কামাল
একাত্তরের অর্জন: অরক্ষিত স্বাধীনতা
বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় যদি ভারতের চেয়ে দ্বি-গুণ বা তিন গুণও হয় তবুও বাংলাদেশীদের ভারতীয় আগ্রাসনের ভয় নিয়েই বাঁচতে হবে -যেমন বাঁচতে হয় ঘরের পাশের জঙ্গলে নেকড়ে বাঘ আছে, এমন ঘরের বাসিন্দাকে। ভারতের মোকাবেলার সামর্থ্য বাংলাদেশের নাই। ভারতের শক্তি তার বিশাল ভূগোলে, অর্থনীতিতে নয়। সামরিক ভাবে অরক্ষিত দেশের কি স্বাধীনতা থাকে? সেরূপ এক অরক্ষিত বাংলাদেশই হলো একাত্তরের অর্জন। স্বাধীনতা তো তাদেরই জুটে যাদের থাকে স্বাধীনতা বাঁচানোর সক্ষমতা। নেকড়ের সামনে ভেড়ার স্বাধীনতা থাকে না। তাই ভারতের সামনে সামরিক ভাবে অরক্ষিত হায়দারাবাদ, কাশ্মীর, গোয়া, মাদভাদাড় ও সিকিমের স্বাধীনতা বাঁচেনি। পাকিস্তান থেকে বিচ্ছন্ন বাংলাদেশের স্বাধীনতাও হয়েছে দুর্বল ও অরক্ষিত। ১৯৪৭’য়ের অর্জন থেকে ১৯৭১’য়ের অর্জনের এখানেই মূল পার্থক্য।
বাংলাদেশীদের স্বাধীনতার জন্য ভারত যুদ্ধ করে দিয়েছে –এটি হলো দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মিথ্যা। ভারত তার নিজের যুদ্ধ নিজে করেছে; সে সাথে সে যুদ্ধে সহযোগিতা নিয়েছে বাঙালি কলাবোরেটরদের থেকে। এ সত্য যারা বুঝে না, বুঝতে হবে তাদের বুঝার সামর্থ্য শিশু সুলভ। ভারত যুদ্ধ করেছে মূলত ২টি কারণে। এক). শত্রু রাষ্ট্র পাকিস্তানকে খণ্ডিত করতে ও দুর্বল করতে; দুই). বিচ্ছিন্ন ও অধিনত এক ক্ষুদ্র বাংলাদেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে। বাংলাদেশ নামে ভারতের পূর্ব সীমান্তে আরেক শক্তিশালী পাকিস্তান নির্মিত হোক -ভারত কখনোই সেটি চায়নি। এবং সেটি ভবিষ্যতেও হতে দিতে চাইবে না। তাছাড়া ইতিহাস থেকে সাক্ষ্য মেলে, কারো স্বাধীনতা নিয়ে ভারত কখনোই কোন কালে মাথা ঘামায়নি, কোন অর্থ দেয়নি এবং যুদ্ধও করেনি। বরং ভারত বিনিয়োগ করেছে ও যুদ্ধ করেছে অন্য দেশের উপর নিজের দখল জমাতে। সেটি করেছে হায়দারাবাদ ও কাশ্মীর দখলে নিতে। ভারত ১৯৭১ সালে সেটিই করেছে বাংলাদেশের মাটিতে। আগামী বহুশত বছর যাবত এ দাসত্বই ভুগতে হবে বাঙালি মুসলিমদের। অথচ এ দাসত্ব পারমানবিক অস্ত্রধারী পাকিস্তানীদের নাই। কারণ, দেশটি একটি পারমানবিক শক্তি; ফলে রয়েছে স্বাধীনতা বাঁচানোর সক্ষমতা।
বাংলাদেশের মূল সমস্যাটি অর্থনৈতিক নয়, বরং সেটি ভূ-রাজনৈতিক। সেটি ক্ষুদ্র ভূগোলের এবং ভারতসেবী রাজনীতির। দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি রাশিয়ার চেয়ে বড়। কিন্তু ক্ষুদ্র ভূগোলের কারণে দেশটি রাশিয়ার ন্যায় বিশ্বশক্তি হওয়ার কথা ভাবতেও পারেনা। বরং বাঁচতে হয় পারমানবিক উত্তর কোরিয়র ভয় নিয়ে। ক্ষুদ্র ভূগোল নিয়ে ভারতের ন্যায় আগ্রাসী ও মুসলিম বিদ্বেষী একটি বৃহৎ শক্তির পাশে বসবাসের এটিই হলো সবচেয়ে বড় বিপদ। তখন বাঁচতে হয় অনুগত এক আশ্রিত দেশের মর্যাদা নিয়ে। বিশ্বের অন্যান্যরাও এরচেয়ে বেশী মর্যাদা দিতে রাজী হয়না। তাই আঞ্চলিক বৃহৎ শক্তি রূপে ভারত পেয়েছে বাংলাদেশের উপর দাদাগিরির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বাংলাদেশের জন্য এটিই হলো বাস্তবতা। প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ বাংলাদেশীগণ যেমন আজ পাচ্ছে না ।
ফেসবুক: https:// www.facebook.com/BangladeshNezameislamparty
ইউটিউব:www.youtube.com/@bangladeshnezameislamparty