০৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

ফেসবুকে বিএনপিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য: সাতকানিয়ায় উত্তেজনা, মন্তব্যকারীকে মারধরের অভিযোগ; সাইবার আইনে মামলার হুঁশিয়ারি বিএনপির

Reporter Name
  • Update Time : ০৭:১৩:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৭ Time View
আনিছুর রহমান 
নিজস্ব (প্রতিবেদক) চট্টগ্রাম :​চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), যুবদল, ছাত্রদল, কৃষকদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে তীব্র ক্ষোভ, উদ্বেগ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। মন্তব্যকারী মো. শহীদুল ইসলাম শহীদকে নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটি সমঝোতার বৈঠক (সালিশ) অনুষ্ঠিত হলেও, পরবর্তীতে তাকে মারধরের অভিযোগ ওঠায় পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়েছে। বিএনপি নেতারা মন্তব্যকারীর বিরুদ্ধে সাইবার আইনে মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
জানা যায়, নলুয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শহীদুল ইসলাম শহীদ নামের এক ব্যক্তি তাঁর ‘Md Shohidul Islam Shohid’ ফেসবুক আইডি থেকে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব সালাউদ্দিন আহমেদের একটি সংবাদ জনতার কন্ঠ নামে একটি নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়।
উক্ত প্রকাশিত সংবাদের কমেন্ট মন্তব্যে তিনি লেখেন, “আমার এলাকায় শিক্ষিত কোনো ছেলেই বিএনপি করে না.. যারা বিএনপি করে সব চোর চাটকা গাঁজা আর বাবাখোর, ডাকাত, কাউকে সম্মান দিতে জানে না।”
​বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং তাঁর দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে এমন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় এলাকায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ২৪ অক্টোবর শুক্রবার দিবাগত রাতে ১নং ওয়ার্ড নলুয়া ইউনিয়ন এলাকায় মন্তব্যকারী মো. শহীদুল ইসলাম শহীদকে নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটি সমঝোতার বৈঠক (সালিশ) অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের একটি ভিডিওতে মন্তব্যকারীকে “আমি কেন ক্ষমা চাইবো” বলে উচ্চস্বরে বলতে শোনা যায়, যা নলুয়ার জনসাধারণকে আরও ক্ষিপ্ত করে তোলে।
​যদিও ঐদিন সমঝোতার মাধ্যমে সালিশের নিষ্পত্তি হয়, তবে নিষ্পত্তির সময় শহীদুল ইসলাম শহীদকে হাত ধরে বৈঠকে বসানোকে কেন্দ্র করে মারধরের অভিযোগ তুলে পরবর্তীতে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। অভিযোগকারীর দাবি, মারধরের ঘটনাটি বিএনপি নেতা আবু সৈয়দ রনির নেতৃত্বে ঘটেছে।
বিএনপি নেতার বক্তব্য ও পাল্টা অভিযোগ: এ বিষয়ে আবু সৈয়দ রনির কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি মারধরের ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, রাজনৈতিক দলের নির্দিষ্ট কোনো নেতাকর্মী অনিয়ম, দুর্নীতি, মাদক কারবারি বা সেবনের সাথে জড়িত থাকলে শুধু তাকে উদ্দেশ্য করেই কথা বলা যায়, কিন্তু দলের সবাইকে নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করা অসম্ভব। তিনি আরও জানান, মন্তব্যকারী যে এলাকা নিয়ে কথা বলেছেন, সেখানে তাঁর মন্তব্যের সঙ্গে একজন লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মন্তব্য করেছেন বলে জানান।
স্থানীয় সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হলেও, পরবর্তীতে ‘কর্ণফুলী মিডিয়া’ নামক একটি নিউজপোর্টাল “ফেসবুকে কমেন্টের জেরে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
​নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সচেতন ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্যের সঠিকতা নেই এবং অপরাধের প্রকৃত দোষ ঢাকতে মিডিয়ার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। তারা জানান, শহীদুল ইসলাম শহীদ স্থানীয় সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার পরও তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি নাড়াচাড়া দিয়ে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।
উক্ত ঘটনায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য নলুয়া ইউনিয়নের জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), যুবদল, ছাত্রদল এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরূপ এবং বাজে মন্তব্য করে শহীদুল ইসলাম শহীদ সাইবার আইন লঙ্ঘন করেছেন। খুব দ্রুত শহীদুল ইসলাম শহীদ প্রকাশিত সংবাদ প্রত্যাহার না করলে, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে সাইবার আইনের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
​স্থানীয়ভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চললেও, রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা এবং আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিতে নলুয়া ইউনিয়নে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

ফেসবুকে বিএনপিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য: সাতকানিয়ায় উত্তেজনা, মন্তব্যকারীকে মারধরের অভিযোগ; সাইবার আইনে মামলার হুঁশিয়ারি বিএনপির

Update Time : ০৭:১৩:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
আনিছুর রহমান 
নিজস্ব (প্রতিবেদক) চট্টগ্রাম :​চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), যুবদল, ছাত্রদল, কৃষকদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে তীব্র ক্ষোভ, উদ্বেগ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। মন্তব্যকারী মো. শহীদুল ইসলাম শহীদকে নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটি সমঝোতার বৈঠক (সালিশ) অনুষ্ঠিত হলেও, পরবর্তীতে তাকে মারধরের অভিযোগ ওঠায় পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়েছে। বিএনপি নেতারা মন্তব্যকারীর বিরুদ্ধে সাইবার আইনে মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
জানা যায়, নলুয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শহীদুল ইসলাম শহীদ নামের এক ব্যক্তি তাঁর ‘Md Shohidul Islam Shohid’ ফেসবুক আইডি থেকে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব সালাউদ্দিন আহমেদের একটি সংবাদ জনতার কন্ঠ নামে একটি নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়।
উক্ত প্রকাশিত সংবাদের কমেন্ট মন্তব্যে তিনি লেখেন, “আমার এলাকায় শিক্ষিত কোনো ছেলেই বিএনপি করে না.. যারা বিএনপি করে সব চোর চাটকা গাঁজা আর বাবাখোর, ডাকাত, কাউকে সম্মান দিতে জানে না।”
​বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং তাঁর দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে এমন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় এলাকায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ২৪ অক্টোবর শুক্রবার দিবাগত রাতে ১নং ওয়ার্ড নলুয়া ইউনিয়ন এলাকায় মন্তব্যকারী মো. শহীদুল ইসলাম শহীদকে নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটি সমঝোতার বৈঠক (সালিশ) অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের একটি ভিডিওতে মন্তব্যকারীকে “আমি কেন ক্ষমা চাইবো” বলে উচ্চস্বরে বলতে শোনা যায়, যা নলুয়ার জনসাধারণকে আরও ক্ষিপ্ত করে তোলে।
​যদিও ঐদিন সমঝোতার মাধ্যমে সালিশের নিষ্পত্তি হয়, তবে নিষ্পত্তির সময় শহীদুল ইসলাম শহীদকে হাত ধরে বৈঠকে বসানোকে কেন্দ্র করে মারধরের অভিযোগ তুলে পরবর্তীতে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। অভিযোগকারীর দাবি, মারধরের ঘটনাটি বিএনপি নেতা আবু সৈয়দ রনির নেতৃত্বে ঘটেছে।
বিএনপি নেতার বক্তব্য ও পাল্টা অভিযোগ: এ বিষয়ে আবু সৈয়দ রনির কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি মারধরের ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, রাজনৈতিক দলের নির্দিষ্ট কোনো নেতাকর্মী অনিয়ম, দুর্নীতি, মাদক কারবারি বা সেবনের সাথে জড়িত থাকলে শুধু তাকে উদ্দেশ্য করেই কথা বলা যায়, কিন্তু দলের সবাইকে নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করা অসম্ভব। তিনি আরও জানান, মন্তব্যকারী যে এলাকা নিয়ে কথা বলেছেন, সেখানে তাঁর মন্তব্যের সঙ্গে একজন লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মন্তব্য করেছেন বলে জানান।
স্থানীয় সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হলেও, পরবর্তীতে ‘কর্ণফুলী মিডিয়া’ নামক একটি নিউজপোর্টাল “ফেসবুকে কমেন্টের জেরে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
​নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক সচেতন ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্যের সঠিকতা নেই এবং অপরাধের প্রকৃত দোষ ঢাকতে মিডিয়ার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। তারা জানান, শহীদুল ইসলাম শহীদ স্থানীয় সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার পরও তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি নাড়াচাড়া দিয়ে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।
উক্ত ঘটনায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য নলুয়া ইউনিয়নের জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), যুবদল, ছাত্রদল এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরূপ এবং বাজে মন্তব্য করে শহীদুল ইসলাম শহীদ সাইবার আইন লঙ্ঘন করেছেন। খুব দ্রুত শহীদুল ইসলাম শহীদ প্রকাশিত সংবাদ প্রত্যাহার না করলে, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে সাইবার আইনের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
​স্থানীয়ভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চললেও, রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা এবং আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিতে নলুয়া ইউনিয়নে উত্তেজনা বিরাজ করছে।