প্রসংঙ্গ- ইনকিলাব ———- মোশারফ হোসেন।

- Update Time : ০১:২৪:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
- / ১৮৩ Time View
কথায় কথা বাড়ে মৈথনে বাড়ে ঘি। আজকের লেখার মূল প্রসঙ্গ ইনকিলাব নিয়ে। প্রিয় পাঠক যতটুকু
বুঝি “ইনকিলাব” শব্দটির মূল উৎপত্তি ফারসি ভাষা থেকে, যার অর্থ “বিপ্লব” বা “পুনর্গঠন”। এটি
আরবি শব্দ “ইনকিলাব” থেকে এসেছে, যেখানে কালব মানে হৃদয় বা পরিবর্তন, এবং উপসর্গ দ্বারা
“পরিবর্তনের প্রক্রিয়া” বোঝানো হয়। এই শব্দটি শুধু একটি ভাষাগত উপাদান নয়; এটি এক গভীর
ভাবধারার প্রতীক। যেখানে সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা চেতনায় এক নতুন যুগের সূচনা বোঝানো হয়।
ইনকিলাব শব্দের অর্থ কি ? ইনকিলাব মানে প্রতিষ্ঠিত শাসন, সমাজ বা কাঠামো ভেঙে ফেলে নতুন
কিছু প্রতিষ্ঠা করা, যা প্রচলিত ধারার বিপরীত বা পরিবর্তনশীল। ইনকিলাব একটি আরবি শব্দ, যার
অর্থ বিপ্লব, বিদ্রোহ, আন্দোলন বা পরিবর্তন। আর এই শব্দটি বাংলা উর্দু ও আরবি ভাষাতে
ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এরপর আসা যাক ইনকিলাব জিন্দাবাদ কি ? এর বাংলা অর্থ “বিপ্লব
দীর্ঘজীবী হোক” বা “বিপ্লব চিরজীবী হোক”। যদিও আমরা বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক বা বিপ্লব
চিরজীবী হোক চাই না। কারন আমরা লোকসংখ্যা অনুযায়ী পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র দেশের মধ্যে
একটি দেশের নাগরিক। আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আমাদের দেশের মাটি খাঁটি সোনার চাইতেও
খাঁটি বলে এত লুটপাটের পর আজও আমরা আল্লাহর রহমতে বেঁচে আছি। ইনকিলাব জিন্দাবাদ এই
স্লোগানটি প্রথম জনপ্রিয়তা পায় ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়। ভারতের বিখ্যাত বিপ্লবী
ভগৎ সিং এবং তার সহযোদ্ধারা এই স্লোগানটি ব্যবহার করতেন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের
বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। পরবর্তীতে এটি উপমহাদেশে নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে
একটি প্রতীকী স্লোগানে পরিণত হয়। ইতিহাসে দেখা যায় মধ্যযুগীয় মুসলিম সাম্রাজ্যগুলো
রাজনৈতিক বা সামাজিক পরিবর্তনের সময় বেশ জোরদার ভাবে ইনকিলাব জিন্দাবাদ শব্দটি ব্যবহার
করতেন।। বিশেষ করে উসমানী সাম্রাজ্যে এবং মুঘল শাসনে প্রাসাদ বিপ্লব বা সিংহাসন বদলের
ক্ষেত্রে ইনকিলাব শব্দটি কূটনৈতিক ভাষায় ব্যবহৃত হতো অধিক বেশি। তবে হ্যাঁ আরেকটি বিষয়
হচ্ছে, ইনকিলাব শব্দটি পরিবর্তন অর্থে ব্যবহৃত হলেও ইসলামে ইনকিলাব মানে শুধু রাজনৈতিক
পরিবর্তন নয় বরং আত্মিক ও নৈতিক পরিবর্তনও। জানা গিয়েছে ইসলামের প্রথম যুগে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াত ও ইসলাম গ্রহণ এক প্রকার চেতনার ইনকিলাবই ছিল।
এই প্রসঙ্গে ইমাম খোমেইনীর ইরানি বিপ্লবকে ইসলামী ইনকিলাব বলা হত। এটা নিয়ে অনেক
আলোচনা সমালোচনা করার পর জানা গিয়েছে, প্রখ্যাত ভারতীয় ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের এক
লেখায় উঠে এসেছিল এই স্লোগানের আদ্যোপান্ত। ২০২২ সালের ২৯ মে একলেখায় তিনি প্রকাশ
করেছেন এমনকি ১৯২১ সালে মাওলানা হাসরাত মোহানি সর্বপ্রথম এই স্লোগানটি ব্যবহার করেন,
যার মানে এমন কিছু যে সমাজ বা কাঠামো ভেঙে ফেলে নতুন কিছু প্রতিষ্ঠা করা যা প্রচলিত ধারার
বিপরীত পরিবর্তনশীল। এখন দেখা যায় বাংলা ভাষায় এটি উগ্র প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর খপ্পরে
পড়েছে, এবং মর্যাদা হারিয়েছে শোচনীয়ভাবে। একটি বিশেষ গোষ্ঠী কলকাতার জ্বালাময়ী কমিনিষ্ট
নেত্রী মিনাক্ষী মুর্খাজী বিশেষ মতলবে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ শ্লোগান চালু করেছিল। এখন দেখা যায়
আমাদের মাঝেও ইনকিলাব জিন্দাবাদ শ্লোগান চালু হয়েছে। মূলত দল গঠনের আগে বৈষম্য বিরোধী
ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের কেউ কেউ ইনকিলাব
জিন্দাবাদ স্লোগানটি ব্যবহার করতেন। কিন্তু গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এ নতুন দলের আত্মপ্রকাশ
অনুষ্ঠানে এই স্লোগান কয়েকজন নেতা ব্যবহার করেন। অনেকেই মনে করেন ইনকিলাব মানে হচ্ছে
সহিংসতা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি শান্তিপূর্ণ পরিবর্তন বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এই ইনকিলাব এর
মাধ্যমে একটি শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তিত হয় বা বিদ্রোহের মাধ্যমে নতুন শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইনকিলাব বলতে বোঝায় এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে বিদ্যমান শাসনব্যবস্থা কিংবা সমাজ কাঠামো
সম্পূর্ণভাবে ভেঙে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক বিপ্লব, সামাজিক বিপ্লব, ধর্মীয় বা
আদর্শিক বিপ্লব, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট যার দিকেই আপনি নজর
দেন না কেন ইনকিলাব জিন্দাবাদ বা ইনকিলাব এর ছোঁয়া মিলবে। সম্প্রতি সময়ে ইনকিলাব মানে কি
বা ইনকিলাব জিন্দাবাদ বলতে কী বোঝায় এটার প্রতি জানার আগ্রহ বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে এন সি পি
অর্থাৎ জাতীয় নাগরিক পার্টির স্লোগানের ব্যবহৃত হওয়া এই শব্দ। সংবিধান অনুযায়ী একটি ধর্ম
নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সকল নাগরিককে চলতে হবে। কোন ব্যক্তি বা গোষ্টি সংবিধানকে অমান্য করে
নিজের ইচ্ছায় যা খুশি তা করবে তা মেনে নেয়া যায় না। গত রমজান মাসে হিন্দুদের বিয়ে নিষিদ্ধ
ঘোষণা করল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিজবুত তাহরির ; নিষেধ অমান্য করলে কমিউনিটি সেন্টারে আগুন
লাগানোর হুমকি অপহরণ, ধর্ষণ, জোর করে ধর্মান্তরিত করার প্রচেষ্টা তো লাগাতার চলছে । এরই
মাঝে রমজান মাসে হিন্দুদের বিয়ে বন্ধ করতে গান, বাজনার উপর ফতোয়া জারি করল তুরস্ক
ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুত তাহরির । বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের হিজবুত তাহরিরের
সেক্রেটারি জেনারেল মহম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেনের স্বাক্ষরিত হাতে লেখা ওই ফতোয়ায় বলা হয়েছে,
"এতদ্বারা চট্টগ্রাম জেলার সকল কমিউনিটি সেন্টারের মালিক কর্তৃপক্ষদের অবগতির জন্য
জানানো যাইতেছে যে পবিত্র মাহে রমজান মাস হলো মুসলিমদের ইবাদতের মাস, কোরান তেলাওয়াতের
মাস, তাছবিহ তাহলিল ঝিকির সিয়াম সাধনার মাস, তাই কমিউনিটি সেন্টারে কোন বাদ্য বাজনা ঢোল
তবলা বাজানোর দ্বারা সনাতনী ধর্মের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো । সনাতনী
ধর্মের বিয়ের অনুষ্ঠান অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক । অন্যথায় রমজান মাসে কমিউনিটি সেন্টারে
অগ্নিসংযোগ করে জালিয়ে দেয়া হবে। ওই ফতোয়ার একবারে উপরে লেখা হয়েছে, বিভিন্ন ইসলামিক
স্লোগান । ফতোয়াটি বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে । চট্রগ্রাম
বাংলাদেশের অংশ এটা এককভাবে মোয়াজ্জেমের না। এই বিষয়ে নোবেল বিজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূস
সরকারের কোনপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।রমজান মাসে হিন্দুদের বিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিজবুত তাহরির ; নিষেধ অমান্য
করলে কমিউনিটি সেন্টারে আগুন লাগানোর হুমকি
বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতা বর্তমানে ইসলামি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির হাতে । আস্তে আস্তে তারা দেশে
ইসলামি শরিয়া শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগুচ্ছে । আর এতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে সেদেশের হিন্দুরা ।
হিন্দু মেয়েদের ইসলামি পোশাক বোরখা পরার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে ।
মুর্তি পুজো বন্ধ করতে মন্দিরে মন্দিরে হামলা চালিয়ে দেবদেবীর প্রতিমা ভাঙচুর করছে মুসলিমরা ।
অপহরণ, ধর্ষণ, জোর করে ধর্মান্তরিত করার প্রচেষ্টা তো লাগাতার চলছে । এরই মাঝে রমজান মাসে
হিন্দুদের বিয়ে বন্ধ করতে গান, বাজনার উপর ফতোয়া জারি করল তুরস্ক ভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন
হিজবুত তাহরির । ফতোয়ায় তারা কমিউনিটি সেন্টারগুলির মালিকদের হুমকি দিয়েছে যে তাদের নিষেধ
অমান্য করলে সব আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেবে ।
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের হিজবুত তাহরিরের সেক্রেটারি জেনারেল মহম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেনের
স্বাক্ষরিত হাতে লেখা ওই ফতোয়ায় বলা হয়েছে, "এতদ্বারা চট্টগ্রাম জেলার সকল কমিউনিটি সেন্টারের
মালিক কর্তৃপক্ষদের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে পবিত্র মাহে রমজান মাস হলো মুসলিমদের
ইবাদতের মাস, কোরান তেলাওয়াতের মাস,তাহাবুদ তাছাবিহ তাহলিল ঝিকির সিয়াম সাধনার মাস, তাই
কমিউনিটি সেন্টারে কোন বাদ্য বাজনা ঢোল তবলা আনসার বাজানোর দ্বারা সনাতনী ধর্মের বিয়ের
অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো । সনাতনী ধর্মের বিয়ের অনুষ্ঠান অবিলম্বে প্রত্যাহার
করা হোক । অন্যথায় রমজান মাসে কমিউনিটি সেন্টারে অগ্নিসংযোগ করে জালিয়ে দেয়া হবে ।' ওই
ফতোয়ার একবারে উপরে লেখা হয়েছে, বিভিন্ন ইসলামিক স্লোগান । ফতোয়াটি বর্তমানে সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে । যদিও এই বিষয়ে মোহাম্মদ ইউনূসের সরকারে
কোনপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।
প্রসঙ্গত, হিযবুত তাহরীর খেলাফত স্থাপনের লক্ষ্যে কুখ্যাত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন
ইসলামী স্টেট (আইএসআইএস) -এর সমর্থক একটি দল, যা নিষিদ্ধ ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে
আন্তর্জাতিকভাবে চিহ্নিত । কিন্তু মোহাম্মদ ইউনূস মার্কিন সহায়তায় শেখ হাসিনাকে সরিয়ে
বাংলাদেশের ক্ষমতা কুক্তিগত করার পর থেকেই এই সন্ত্রাসী সংগঠনে বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়ে গেছে ।
এখন তারা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রাজপথে প্রকাশ্যে মিছিল করে বাংলাদেশে শরিয়া শাসন
প্রতিষ্ঠার দাবি তুলছে ।।
এটাই ইসলামের শান্তি আর সৌন্দর্য!!!
·
অনুসরণ
রাষ্ট্রবিজ্ঞান (সাম্মানিক) নিয়ে পড়াশুনা করেছেন (2019)শনি
আপনি যদি নিজেকে "মাছে ভাতে বাঙালি" বলে গর্ব করতে পারেন, তাহলে কোরবানির বিরোধিতা করার
নৈতিক অবস্থান আর থাকে না।
গবেষণায় দেখা গেছে, মাছও ব্যথা অনুভব করে এবং মৃত্যুর সময় কষ্ট পায় এবং মাছের ধীরে ধীরে মারা
যাওয়াটা একটা যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়া।
আপনি যদি মাছ খেতে পারেন, তাহলে কোরবানিকে নিষ্ঠুর বলার অধিকার কোথায়? বরং সঠিক নিয়মে
কোরবানি করার সময় পশু এর থেকে আরও কম সময় ব্যথা অনুভব করে, নরমালি গড়ে ২০ সেকেন্ড।
ধরে নিচ্ছি, আপনি নিরামিষভোজী। প্রতি বছর শাকসবজি উৎপাদনের জন্য কোটি কোটি পোকামাকড় ও
ইঁদুর মারা যায়। কীটনাশক, ইঁদুর মারার ফাঁদ এসব প্রাণঘাতী উপায়ে জমি রক্ষা করা হয়। যদি প্রাণীপ্রেম
থাকেই, তবে সেটা শুধু গরু-ছাগলের জন্য কেন, পোকামাকড় বা ইঁদুরের জন্য নয় কেন?
মূলত, অন্য কোনো প্রাণীর ক্ষতি না করে মানুষের বেঁচে থাকা সম্ভব না। আমরা কেবল এই খাদ্যশৃঙ্খলের
একটি অংশ মাত্র। জীবন মানেই অন্য প্রাণীর ওপর নির্ভরশীলতা।
আর কোরবানির সময়ই তো বহু দরিদ্র পরিবার মাংস খাওয়ার সুযোগ পায়। সারা বছর যে মানুষ মাংস
কিনতে পারে না, কোরবানির মাধ্যমে তার ঘরেও তা পৌঁছে যায়। এছাড়া গোটা কোরবানির অর্থনীতি, যেমন
গরু পালন, চিকিৎসা, পরিবহন, কসাই, চামড়াশিল্প, সবই হাজারো মানুষের জীবিকা।
সুতরাং প্রশ্ন হলো…
আপনি কি সত্যিই প্রাণীর কষ্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন, নাকি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুশীলনকে নিশানা করাই
আপনার মূল উদ্দেশ্য?
আমি আপনাদের প্রাণীপ্রেমকে শ্রদ্ধা করি। তবে আক্রমণাত্মক বক্তব্যের জবাবে কিছু প্রশ্ন তুলতেই
হলো।