০২:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ধর্মীয় ঐতিহ্যের জমি দখলে লোভীদের থাবা! সোনাইমুড়ী মসজিদের সম্পত্তি ফেরত চায় এলাকাবাসী
Reporter Name
- Update Time : ০৫:৩৮:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
- / ৮ Time View

সোনাইমুড়ী স্টেশন মসজিদ আজ অস্তিত্ব সংকটে
মোহাম্মদ হানিফ, নোয়াখালী প্রতিনিধি :নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী রেলওয়ে স্টেশন জামে মসজিদের পবিত্র ওয়াকফভুক্ত সম্পত্তি দখল ও ভুয়া দলিলের মাধ্যমে হস্তান্তরের অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় মুসল্লি ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে মসজিদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মসজিদ পরিচালনা কমিটি কঠোর ভাষায় এ দখল অপচেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সফিকুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সোনাইমুড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র মোতাহের হোসেন মানিক, উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. সাহাব উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সামছুল আরেফিন জাফর, সহ-সভাপতি লাতু ভূঁইয়া, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য ইমাম হোসেন, ব্যবসায়ী ও অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাওতলা মৌজায় মোট সাড়ে ৬১ শতাংশ ওয়াকফভুক্ত সম্পত্তি রয়েছে, যা ১৯৫৬ সালে প্রখ্যাত আলেম ও রাজনীতিক মাওলানা মোখলেসুর রহমান প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি স্থানীয় হিন্দু দাতাদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে জমি ক্রয় করে মসজিদুল আনোয়ার নামে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন, যা সোনাইমুড়ী স্টেশনের ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে উঠেছিল।
মসজিদের পাশে তার উদ্যোগে খনন করা পুকুরটি আজও মুসল্লিদের ওযু ও গোসলের একমাত্র স্থান।
কিন্তু বক্তাদের অভিযোগ, মাওলানা মোখলেসুর রহমান ও তার পুত্র শেখ জাকারিয়ার মৃত্যুর পর একদল ভূমিখেকো ও কুচক্রী মহল মসজিদের উত্তরাধিকারীদের প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া দলিল তৈরি করে জমি দখল করে নেয়।
তারা শুধু মসজিদের পুকুর দখলই করেনি, বরং তা মাটি ভরাট করে ৭০ হাজার টাকার মাছ লুট করেছে এবং মুসল্লিদের ওযু গোসলের পথ বন্ধ করে দিয়েছে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটি অভিযোগ করে, দখলদাররা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় মিথ্যা মালিকানা দাবি করে দখল বজায় রেখেছে।
প্রতিবাদ করতে গেলে মসজিদের কমিটির সদস্য ও মুসল্লিদের মারধর ও হুমকির শিকার হতে হয়।
এর ফলে মসজিদটির সংস্কার ও সম্প্রসারণ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে, অথচ এটি প্রতিদিন শত শত মুসল্লির একমাত্র নামাজের জায়গা।
এ ছাড়া ধন্যপুর এলাকার দাতা বড় মিয়া ওরফে সিরাজুল ইসলাম মসজিদের নামে ওয়াকফকৃত আরও ৩০ শতাংশ জমিও এখন দখলকারীদের কবলে বলে জানানো হয়।
বক্তারা বলেন, এই দখলবাজ চক্র মসজিদের সম্পত্তি গ্রাস করতে নোংরা রাজনীতি ও টাকার প্রভাব ব্যবহার করছে। তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,সোনাইমুড়ী রেলওয়ে স্টেশন জামে মসজিদ কেবল একটি উপাসনালয় নয় এটি আমাদের বিশ্বাস, ঐতিহ্য ও ইতিহাসের অংশ। এই সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা ইসলাম ও মানবতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
তারা অবিলম্বে ভুয়া দলিল বাতিল, দখলমুক্ত সম্পত্তি ফেরত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।বক্তারা আরও বলেন, প্রয়োজনে তারা ধর্মপ্রাণ জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন, যাতে পবিত্র ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষা পায় এবং দখলদারদের অপকর্মের বিচার হয়।
স্থানীয় জনগণ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, দখলদাররা যতই শক্তিশালী হোক, মসজিদের সম্পত্তি ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় মুসল্লিগণ উপস্থিত ছিলেন।
Tag :























