০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

খাগড়াছড়ির গুইমারায় নিরীহ ৩ নাগরিক কে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৪৪:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১১ Time View

খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারায় পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ কতৃক ৩ জন নিরীহ নাগরিককে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে ৩০ অক্টোবর (২০২৫) বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের নেতা-কর্মীরা।

এ সময় বক্তব্য রাখেন সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ এর প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা আল ইহযায, সদস্য সেলিম রেজা বাচ্চু, চাকরি সংস্কার আন্দোলনের আহবায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জালাল আহমদ,পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ মিজান উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক রাসেল মাহমুদ, চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা এম এ হাশেম রাজু, ন্যাশনাল লেবার পার্টির মুখপাত্র শরীফুল ইসলাম সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের নেতা এনাম, নজরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক নেতৃবৃন্দ।

এ সময় সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা আল ইহযায বলেন, “যে পাহাড়ে শান্তির স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেই পাহাড় আজ সন্ত্রাসের কবলে। প্রশাসন ও সরকারের উচিত এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।যদি পাহাড়ে উন্নয়ন ও সহাবস্থান চাইলে আগে এই সন্ত্রাসী শক্তির মূলোৎপাটন করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “খাগড়াছড়িতে তুচ্ছ ঘটনার নাটক সাজিয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ষড়যন্ত্রমূলক এক ধর্ষণবিরোধী মহাসমাবেশ আয়োজন করে উগ্রপন্থী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ। এসময় মহাসমাবেশের নামে খাগড়াছড়ি সদরে বিভিন্ন এলাকায় তান্ডব চালায় ইউপিডিএফ এর নেতৃত্বাধীন উগ্রপন্থী সংগঠন সমূহের সদস্যরা। তখন সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় তারা। এক পর্যায়ে জেলার শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে খাগড়াছড়ি সদর । এর মাঝেও সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দোকানপাট ভাংচুর, লুটপাট ও স্থানীয় বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী ও উপজাতিয় গ্রাম গুলোতেও হামলা চালায় মাইকেল চাকমার নেতৃত্বাধীন টিম। এতে দুইশতাধিক মানুষ আহত হয় ।

দুইদিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর পরিকল্পিতভাবে সংঘাত ছড়িয়ে দিতে খাগড়াছড়ি জেলার গুইমার উপজেলায় সেনাবাহিনীকে লক্ষ করে আবারও হামলা চালানো ।এতে ১৬জন সেনা সদস্য ও স্থানীয় অন্তত শতাধিক নিরীহ মানুষ আহত হয়। হামলার দায়ভার  সেনাবাহিনীর উপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ জাতিদের ৩জন যুবক কে হত্যা করে মাইকেল চাকমার নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ।”

বক্তারা বলেন,”আজ পাহাড়ে যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করছে, তারাই শান্তির মুখোশ পরে আন্তর্জাতিক মহলে মিথ্যাচার চালাচ্ছে। এই সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে-নইলে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।”

বক্তারা পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে ইউপিডিএফের চাঁদাবাজি, অপহরণ, হত্যা ও দমননীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি একটি সুসংগঠিত পরিকল্পনার অংশ।শান্তিপ্রিয় পাহাড়ি জনগণকেও ভয়ভীতির মধ্যে রেখে আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা চলছে।আইনের শাসন যেখানে ব্যর্থ হয়, সেখানে সন্ত্রাস মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। পাহাড়ের বর্তমান পরিস্থিতি সেই ব্যর্থতারই প্রতিচ্ছবি।”

বক্তারা আরো বলেন,”পার্বত্য চট্টগ্রাম আমাদের দেশের এক অনন্য সম্পদ, যেখানে ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মের মানুষ যুগ যুগ ধরে মিলেমিশে বসবাস করছে। এই অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অঞ্চলটি নিয়ে আন্তর্জাতিক ভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রকারীরা কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।”

সকল ধরনের পরিস্থিতি শান্ত করে পাহাড়ে বসবাসরত বাসিন্দাদের মাঝে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান বক্তারা।প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

খাগড়াছড়ির গুইমারায় নিরীহ ৩ নাগরিক কে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

Update Time : ০৫:৪৪:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারায় পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ কতৃক ৩ জন নিরীহ নাগরিককে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে ৩০ অক্টোবর (২০২৫) বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের নেতা-কর্মীরা।

এ সময় বক্তব্য রাখেন সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ এর প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা আল ইহযায, সদস্য সেলিম রেজা বাচ্চু, চাকরি সংস্কার আন্দোলনের আহবায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জালাল আহমদ,পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ মিজান উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক রাসেল মাহমুদ, চট্টগ্রাম সমিতির সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা এম এ হাশেম রাজু, ন্যাশনাল লেবার পার্টির মুখপাত্র শরীফুল ইসলাম সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের নেতা এনাম, নজরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন সংগঠনের শতাধিক নেতৃবৃন্দ।

এ সময় সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা আল ইহযায বলেন, “যে পাহাড়ে শান্তির স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেই পাহাড় আজ সন্ত্রাসের কবলে। প্রশাসন ও সরকারের উচিত এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।যদি পাহাড়ে উন্নয়ন ও সহাবস্থান চাইলে আগে এই সন্ত্রাসী শক্তির মূলোৎপাটন করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “খাগড়াছড়িতে তুচ্ছ ঘটনার নাটক সাজিয়ে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ষড়যন্ত্রমূলক এক ধর্ষণবিরোধী মহাসমাবেশ আয়োজন করে উগ্রপন্থী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ। এসময় মহাসমাবেশের নামে খাগড়াছড়ি সদরে বিভিন্ন এলাকায় তান্ডব চালায় ইউপিডিএফ এর নেতৃত্বাধীন উগ্রপন্থী সংগঠন সমূহের সদস্যরা। তখন সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় তারা। এক পর্যায়ে জেলার শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে খাগড়াছড়ি সদর । এর মাঝেও সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দোকানপাট ভাংচুর, লুটপাট ও স্থানীয় বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী ও উপজাতিয় গ্রাম গুলোতেও হামলা চালায় মাইকেল চাকমার নেতৃত্বাধীন টিম। এতে দুইশতাধিক মানুষ আহত হয় ।

দুইদিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর পরিকল্পিতভাবে সংঘাত ছড়িয়ে দিতে খাগড়াছড়ি জেলার গুইমার উপজেলায় সেনাবাহিনীকে লক্ষ করে আবারও হামলা চালানো ।এতে ১৬জন সেনা সদস্য ও স্থানীয় অন্তত শতাধিক নিরীহ মানুষ আহত হয়। হামলার দায়ভার  সেনাবাহিনীর উপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ জাতিদের ৩জন যুবক কে হত্যা করে মাইকেল চাকমার নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ।”

বক্তারা বলেন,”আজ পাহাড়ে যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করছে, তারাই শান্তির মুখোশ পরে আন্তর্জাতিক মহলে মিথ্যাচার চালাচ্ছে। এই সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে-নইলে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।”

বক্তারা পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে ইউপিডিএফের চাঁদাবাজি, অপহরণ, হত্যা ও দমননীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি একটি সুসংগঠিত পরিকল্পনার অংশ।শান্তিপ্রিয় পাহাড়ি জনগণকেও ভয়ভীতির মধ্যে রেখে আধিপত্য কায়েমের চেষ্টা চলছে।আইনের শাসন যেখানে ব্যর্থ হয়, সেখানে সন্ত্রাস মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। পাহাড়ের বর্তমান পরিস্থিতি সেই ব্যর্থতারই প্রতিচ্ছবি।”

বক্তারা আরো বলেন,”পার্বত্য চট্টগ্রাম আমাদের দেশের এক অনন্য সম্পদ, যেখানে ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মের মানুষ যুগ যুগ ধরে মিলেমিশে বসবাস করছে। এই অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অঞ্চলটি নিয়ে আন্তর্জাতিক ভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রকারীরা কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।”

সকল ধরনের পরিস্থিতি শান্ত করে পাহাড়ে বসবাসরত বাসিন্দাদের মাঝে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান বক্তারা।প্রেস বিজ্ঞপ্তি