০৭:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬
কুয়েটের ৩২ শিক্ষার্থীর অনশন অব্যাহত

কুয়েটের ৩২ শিক্ষার্থীর অনশন অব্যাহত জাতীয় মানবাধিকার সমিতির গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
  • Update Time : ০৫:২৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৪৬৯ Time View

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন ৩২ জন ছাত্র। সোমবার বিকাল ৪টা থেকে ক্যাম্পাসের ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের’ বারান্দায় এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। রাতভর সেখানেই ছিলেন এবং মঙ্গলবার দুপুরেও তাদের সেখানে দেখা গেছে।

উপাচার্যকে অপসারণ না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ছেন অনশনরত শিক্ষার্থীরা।

অনশনে থাকা ৩২ শিক্ষার্থী ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। একজন শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে গত রাতেই অনশন থেকে সরে যান। অন্য এক শিক্ষার্থীকে তার অভিভাবক এসে অনশন থেকে নিয়ে গেছেন। অনশন ভাঙাতে তৎপর রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দফতর।শিক্ষা উপদেষ্টা ফোন করে তাদের অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৩২ শিক্ষার্থী সোমবার পৌনে ৪টার দিকে আমরণ অনশনে অংশ নেন। এ সময় সেখান জড়ো হওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা। অনশনরতদের চারদিকে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে উৎসাহ প্রদান করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের পক্ষ থেকে সোমবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের আমরণ কর্মসূচি থেকেই ছাত্রদের আলোচনায় বসানোর প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। সেদিন সকালে তারা আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান। দুপুর আড়াইটায় ছাত্র কল্যাণ পরিচালক, সহকারী পরিচালক, ডেপুটি পরিচালকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পূর্বনির্ধারিত অনশনস্থল স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় অবস্থান নেন।

অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা বলেন, কুয়েটের এই উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য ভিসি দায়ী। তিনি বহিরাগতদের প্রশ্রয় দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এর দায় নিয়ে ভিসিকে পদত্যাগ করতে হবে। ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে ১৪ এপ্রিল রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে এবং আবাসিক হলগুলো ২ মে খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। গত দুই দিন ধরে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছিলেন। শিক্ষার্থীরা সোমবার দুপুরে নিজেরাই একের পর এক হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন।
এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো.মঞ্জুর হোসেন ঈসা, মহাসচিব এডভোকেট সাইফুল ইসলাম সেকুল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন আল আমিন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থীরা জীবন সংকটে রয়েছে, অনেকে অসুস্থ হয়ে গেছে।অনেকের জীবন থেকে মূল্যবান সময় হারিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে কুয়েট এর ১৯ ব্যাচ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। করোনায় তাদের জীবন থেকে ১৮ মাস কেড়ে নিয়েছে, ২৪ এর গণ অভ্যুত্থান ৩ মাস করে নিয়েছে,বর্তমান পরিস্থিতি ইতিমধ্যে ২ মাস কেড়ে নিয়েছে। অন্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী যখন কর্ম জীবনে প্রবেশ করেছে তখন তারা অনিশ্চিত জীবনের পথে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে। এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারেনা।কুয়েট ভিসি তার সন্মান নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত।
এ বিষয় প্রধান উপদেষ্টার দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রোববার ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।(বিজ্ঞপ্তি)

 

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

One thought on “কুয়েটের ৩২ শিক্ষার্থীর অনশন অব্যাহত জাতীয় মানবাধিকার সমিতির গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

কুয়েটের ৩২ শিক্ষার্থীর অনশন অব্যাহত

কুয়েটের ৩২ শিক্ষার্থীর অনশন অব্যাহত জাতীয় মানবাধিকার সমিতির গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা

Update Time : ০৫:২৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন ৩২ জন ছাত্র। সোমবার বিকাল ৪টা থেকে ক্যাম্পাসের ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের’ বারান্দায় এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। রাতভর সেখানেই ছিলেন এবং মঙ্গলবার দুপুরেও তাদের সেখানে দেখা গেছে।

উপাচার্যকে অপসারণ না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ছেন অনশনরত শিক্ষার্থীরা।

অনশনে থাকা ৩২ শিক্ষার্থী ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। একজন শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে গত রাতেই অনশন থেকে সরে যান। অন্য এক শিক্ষার্থীকে তার অভিভাবক এসে অনশন থেকে নিয়ে গেছেন। অনশন ভাঙাতে তৎপর রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দফতর।শিক্ষা উপদেষ্টা ফোন করে তাদের অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৩২ শিক্ষার্থী সোমবার পৌনে ৪টার দিকে আমরণ অনশনে অংশ নেন। এ সময় সেখান জড়ো হওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা। অনশনরতদের চারদিকে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে উৎসাহ প্রদান করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের পক্ষ থেকে সোমবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের আমরণ কর্মসূচি থেকেই ছাত্রদের আলোচনায় বসানোর প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। সেদিন সকালে তারা আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান। দুপুর আড়াইটায় ছাত্র কল্যাণ পরিচালক, সহকারী পরিচালক, ডেপুটি পরিচালকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পূর্বনির্ধারিত অনশনস্থল স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় অবস্থান নেন।

অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা বলেন, কুয়েটের এই উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য ভিসি দায়ী। তিনি বহিরাগতদের প্রশ্রয় দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এর দায় নিয়ে ভিসিকে পদত্যাগ করতে হবে। ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে ১৪ এপ্রিল রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির সহিংসতার ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে এবং আবাসিক হলগুলো ২ মে খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে রাতেই প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। গত দুই দিন ধরে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছিলেন। শিক্ষার্থীরা সোমবার দুপুরে নিজেরাই একের পর এক হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন।
এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো.মঞ্জুর হোসেন ঈসা, মহাসচিব এডভোকেট সাইফুল ইসলাম সেকুল এবং সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন আল আমিন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থীরা জীবন সংকটে রয়েছে, অনেকে অসুস্থ হয়ে গেছে।অনেকের জীবন থেকে মূল্যবান সময় হারিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে কুয়েট এর ১৯ ব্যাচ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। করোনায় তাদের জীবন থেকে ১৮ মাস কেড়ে নিয়েছে, ২৪ এর গণ অভ্যুত্থান ৩ মাস করে নিয়েছে,বর্তমান পরিস্থিতি ইতিমধ্যে ২ মাস কেড়ে নিয়েছে। অন্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী যখন কর্ম জীবনে প্রবেশ করেছে তখন তারা অনিশ্চিত জীবনের পথে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে। এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারেনা।কুয়েট ভিসি তার সন্মান নিয়ে পদত্যাগ করা উচিত।
এ বিষয় প্রধান উপদেষ্টার দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রোববার ১৩ এপ্রিল বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।(বিজ্ঞপ্তি)