০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
এখন ও সেনাবাহিনীর মধ্য সৈরাচার লুকিয়া আছে

Reporter Name
- Update Time : ০২:১৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
- / ১০০ Time View

মাজলুমের ডাক মাজলুমের ডাক সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি সৈয়দ মোঃ আহসান ও সাধারন সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার আনসারী বলেন একজন কর্মরত মেজর নাকি ১৯৮ দিন ধরে নিখোঁজ! তার খোঁজ কেউ জানে না, অথচ তিনি নাকি খোদ রাজধানীতে বসেই চালাচ্ছিলেন নাশকতার প্রশিক্ষণ! এর পেছনে কারা? আজ সেই চাঞ্চল্যকর তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরব। কে এই মেজর সাদেক? এই ঘটনার কেন্দ্রে আছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন কর্মরত অফিসার, মেজর সাদিকুল হক। তার বিএ নম্বর ৯৫৩৬। তিনি ৭৪তম লং কোর্সের একজন অফিসার। তার পোস্টিং ছিল রামুতে, ৩৬ ইস্ট বেঙ্গলে। তার শ্বশুর সাবেক পিজিআর কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর হারুন। অর্থাৎ, তিনি একটি প্রভাবশালী পরিবারের সাথে যুক্ত। অবাক করা বিষয় হলো, এই মেজর সাদেক তার কর্মস্থল রামুতে প্রায় ১৯৮ দিন ধরে অনুপস্থিত ছিলেন! একজন সেনা অফিসার এত লম্বা সময় ধরে অনুপস্থিত থাকাটা প্রায় অসম্ভব। তাহলে প্রশ্ন হলো, তিনি কোথায় ছিলেন? তার ইউনিট থেকে বলা হচ্ছে, তিনি নাকি অসুস্থ হয়ে প্রথমে রামু সিএমএইচ এবং পরে ঢাকা সিএমএইচ-এ ভর্তি ছিলেন। কিন্তু এটা কি শুধুই একটা গল্প? একটা কাভার-আপ স্টোরি? কারণ আসল ঘটনা আরও ভয়াবহ। আপনাদের কী মনে হয়? একজন মেজর এত দিন কর্মস্থলের বাইরে থাকতে পারেন? সম্প্রতি ঢাকার ভাটারা থানা পুলিশ সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পরই বেরিয়ে আসে এই ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের তথ্য। কী তথ্য পাওয়া গেছে? সোহেল রানা স্বীকার করেছে যে, মেজর সাদেক এবং তার স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনের নির্দেশে তারা আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীদের সংগঠিত করছিল। কোথায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল? ঢাকার তিনটি জায়গায়—মিরপুর ডিওএইচএস, কাটাবন এবং পূর্বাচলের সি-শেল রেস্টুরেন্টে প্রায় ৪০০ কর্মীকে নাশকতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়! ভাবুন, মিরপুর ডিওএইচএস-এর মতো একটি সুরক্ষিত এলাকায় কীভাবে এই প্রশিক্ষণ সম্ভব হলো? কী প্রশিক্ষণ? তাদেরকে ‘হিট অ্যান্ড রান’ অর্থাৎ অতর্কিতে হামলা করে পালিয়ে যাওয়ার কৌশল শেখানো হচ্ছিল। এখন আমি যে তথ্যটি দিতে যাচ্ছি, তা শুনে আপনি চমকে উঠতে বাধ্য। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা জানিয়েছে, এই পুরো পরিকল্পনার পেছনে নাকি নির্দেশনা ছিল খোদ প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের! তাদের ভাষ্যমতে, জয়ের সাথে মেজর সাদেকের সরাসরি যোগাযোগ ছিল এবং তার নির্দেশেই এই নাশকতার প্রস্তুতি চলছিল। আপনাদের কাছে হয়তো এই ঘটনাটি অবিশ্বাস্য বা বিচ্ছিন্ন মনে হতে পারে। কিন্তু আমি যদি বলি, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়? আমাদের দেশের ইতিহাসে বারবার এমন ষড়যন্ত্রের পুনরাবৃত্তি হয়েছে, যেখানে সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হয়েছে। আসুন, একটু ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকাই। আপনাদের কি ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের কথা মনে আছে? আমাদের সেনাবাহিনীর ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক এবং মর্মান্তিক ঘটনা, যেখানে ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। সেদিনও একটি গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা বলা হয়েছিল। বলা হয়েছিল এটি ছিল শুধু বেতন-ভাতার জন্য বিদ্রোহ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড কি সত্যিই এত সহজ কোনো ঘটনার ফল? নাকি এটি ছিল সেনাবাহিনীকে মেধাশূন্য করার এক গভীর ষড়যন্ত্র, যার মূল হোতারা আজও পর্দার আড়ালে? আজকের মেজর সাদেকের ঘটনা কি সেই পুরনো ষড়যন্ত্রের নতুন কোনো রূপ নয়? আরেকটু পেছনে ফিরে তাকাই। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনীতে কী ঘটেছিল? একটি সাজানো বিচারের মাধ্যমে অনেক দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। তাদের পরিবার আজও জানে না তাদের আসল অপরাধ কী ছিল।

তখনও ক্ষমতার পালাবদলের জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করা হয়েছিল এবং অনেক নির্দোষ অফিসারকে তার মূল্য দিতে হয়েছিল। আর সাম্প্রতিক সময়েই বা কী দেখছি আমরা? ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান নাসির, লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইফতেখারের মতো কর্মকর্তাদের পরিণতি আমাদের কী বার্তা দেয়? যখনই কোনো দেশপ্রেমিক অফিসার অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চেয়েছেন, তখনই তাদের কোনো না কোনো অজুহাতে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। প্রশ্ন হলো, একজন অফিসার ১৯৮ দিন ধরে অনুপস্থিত থেকে দেশদ্রোহীমূলক কাজে লিপ্ত, আর সেনাবাহিনীর চেইন অফ কমান্ড, বিশেষ করে সেনাপ্রধান, কিছুই জানতেন না? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? নাকি পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছিল? একজন প্রাক্তন সেনা সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসানুল কবির বলেছেন, এই ঘটনাগুলো আমাদের গর্বের প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনীকে ভেতর থেকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যারা গুম-খুনের সাথে জড়িত, তাদের বিচার না হলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে। মেজর সাদেকের এই ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ, যা আমাদের দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য করা হচ্ছে। মূলধারার মিডিয়া হয়তো ভয়ে এই খবর দেখাবে না। তাই আপনাদের দায়িত্ব হলো, এই লেখাটি যত বেশি সম্ভব শেয়ার করে দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সত্যের এই লড়াইয়ে আপনাদের সমর্থনই জাতির শক্তি।
Tag :