০৪:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পিপলস টিভি ৬

আরাকানকে ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়া চরম ঝুঁকিপূর্ণ : বাংলাদেশ ন্যাপ

মতামত
  • Update Time : ০৭:২২:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
  • / ২৫৮ Time View

ফেসবুক: https://www.facebook.com/BangladeshNezameislamparty

ইউটিউব:www.youtube.com/@bangladeshnezameislamparty

আরাকানকে করিডোর দেওয়া বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্থিতিশীলতা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া মিয়ানমারের রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আত্মঘাতি’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ শীর্ষ নেতৃত্ব।

তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মানবিক করিডোরের প্রস্তাব জাতিসংঘ থেকে আসুক অথবা আমেরিকা থেকে আসুক, তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। ইতিহাস বলে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, কঙ্গো অথবা সিরিয়া, কোথাও মানবিক করিডোরের বাস্তবায়ন সফল হয় নাই। ইউক্রেন-রাশিয়াতে জাতিসংঘ প্রস্তাবিত মানবিক করিডোরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।’

রবিবার (৪ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেছেন।

তারা আরো বলেন, ‘মায়ানমারের সামরিক জান্তাদের পাশ কাটিয়ে আরাকানের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে রাখাইনে মানবিক করিডোর দিলে তাতে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে বাধ্য এবং তা হবে বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতজানু হয়ে গোলামির নবতর সংস্করণ। যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এই ধরনের সিদ্ধান্ত শান্তির সহাবস্থান ও জোট নিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থী।’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘বস্তুত করিডোরের মাধ্যমে আরাকান আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে নিরাপত্তার কৌশলগত ‘বাফার স্টেট’ হিসেবে বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদকে ব্যবহারের সুযোগ দিতে চায়। এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দীতায় জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে পঢ়বে। বিশ্বের খুব কম মানবিক করিডরই নিরাপত্তাঝুঁকির বাইরে থেকেছে। এ ধরনের করিডর চালু হলে সেই অঞ্চলে থাকা বিদ্রোহী বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীসহ অপরাধীরা সেটাকে নিরাপদ পথ হিসেবে ব্যবহারের বহু নজির রয়েছে।  ’

বাংলাদেশ ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেন, ‘বাংলাদেশ হয়ে যে ত্রাণ যাবে, তা রাখাইনের বেসামরিক নাগরিকদের কাছে পৌঁছাবে, নাকি আরাকান আর্মি সেগুলোকে দখলে নেবে, তার নিশ্চয়তা জাতিসংঘ কিভাবে দিবে, তা পরিস্কার নয়। মিয়ানমারের এ অঞ্চলটি মাদক, অস্ত্র এবং নারী ও শিশু পাচার কেন্দ্র্র হিসেবে পরিচিত। করিডোর দিলে মাদক বা অবৈধ অস্ত্র বাংলাদেশে প্রবেশের শঙ্কা থাকবে। এ ছাড়া মিয়ানমারের রাখাইনে বর্তমানে কোনো স্বীকৃত প্রশাসন নেই। ফলে সেখানকার অস্বীকৃতদের সঙ্গে কোনো ধরনের দরকষাকষির আলাদা ঝুঁকি রয়েছে। সেই সঙ্গে অন্যান্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তো রয়েছেই।’

তারা বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচার সরকার একক সিদ্ধান্তে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে। যার কারণে নিরাপত্তাসহ সামাজিক নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে আরও ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কথা শোনা যাচ্ছে। এতে করে সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে সকলেই আশঙ্কা করছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে আর কোন সমস্যা সৃষ্টি করা উচিত হবে না। ’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘আমরা আরেকটা গাজায় পরিণত হতে চাই না’  বাংলাদেশকে কোন যুদ্ধের মধ্যে জড়াতে চাই না। আমাদের দেশে এস কেউ সমস্যা সৃষ্টি করুক সেটিও আমাদের কাম্য হতে পারে না। একে তো আমাদের দেশ রোহিঙ্গা নিয়ে বড় সমস্যায় রয়েছে, তার ওপর প্যাসেজ দেওয়া নিয়ে যাতে সমস্যার সৃষ্টি না হয় এ জন্য সকলকে সচেতন হতে হবে। ‘মানবিক করিডোর’ পেতে শুধু বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে প্রতিবেশী অন্য দেশেও চেষ্টা করা উচিত জাতিসংঘের।’

2 Attachments • Scanned by Gmail

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thedailysarkar@gmail.com

About Author Information

আরাকানকে ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়া চরম ঝুঁকিপূর্ণ : বাংলাদেশ ন্যাপ

Update Time : ০৭:২২:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

ফেসবুক: https://www.facebook.com/BangladeshNezameislamparty

ইউটিউব:www.youtube.com/@bangladeshnezameislamparty

আরাকানকে করিডোর দেওয়া বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্থিতিশীলতা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া মিয়ানমারের রাখাইনে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে আত্মঘাতি’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ শীর্ষ নেতৃত্ব।

তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মানবিক করিডোরের প্রস্তাব জাতিসংঘ থেকে আসুক অথবা আমেরিকা থেকে আসুক, তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। ইতিহাস বলে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, কঙ্গো অথবা সিরিয়া, কোথাও মানবিক করিডোরের বাস্তবায়ন সফল হয় নাই। ইউক্রেন-রাশিয়াতে জাতিসংঘ প্রস্তাবিত মানবিক করিডোরের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।’

রবিবার (৪ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেছেন।

তারা আরো বলেন, ‘মায়ানমারের সামরিক জান্তাদের পাশ কাটিয়ে আরাকানের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে রাখাইনে মানবিক করিডোর দিলে তাতে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে বাধ্য এবং তা হবে বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতজানু হয়ে গোলামির নবতর সংস্করণ। যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এই ধরনের সিদ্ধান্ত শান্তির সহাবস্থান ও জোট নিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থী।’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘বস্তুত করিডোরের মাধ্যমে আরাকান আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে নিরাপত্তার কৌশলগত ‘বাফার স্টেট’ হিসেবে বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদকে ব্যবহারের সুযোগ দিতে চায়। এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দীতায় জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে পঢ়বে। বিশ্বের খুব কম মানবিক করিডরই নিরাপত্তাঝুঁকির বাইরে থেকেছে। এ ধরনের করিডর চালু হলে সেই অঞ্চলে থাকা বিদ্রোহী বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীসহ অপরাধীরা সেটাকে নিরাপদ পথ হিসেবে ব্যবহারের বহু নজির রয়েছে।  ’

বাংলাদেশ ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেন, ‘বাংলাদেশ হয়ে যে ত্রাণ যাবে, তা রাখাইনের বেসামরিক নাগরিকদের কাছে পৌঁছাবে, নাকি আরাকান আর্মি সেগুলোকে দখলে নেবে, তার নিশ্চয়তা জাতিসংঘ কিভাবে দিবে, তা পরিস্কার নয়। মিয়ানমারের এ অঞ্চলটি মাদক, অস্ত্র এবং নারী ও শিশু পাচার কেন্দ্র্র হিসেবে পরিচিত। করিডোর দিলে মাদক বা অবৈধ অস্ত্র বাংলাদেশে প্রবেশের শঙ্কা থাকবে। এ ছাড়া মিয়ানমারের রাখাইনে বর্তমানে কোনো স্বীকৃত প্রশাসন নেই। ফলে সেখানকার অস্বীকৃতদের সঙ্গে কোনো ধরনের দরকষাকষির আলাদা ঝুঁকি রয়েছে। সেই সঙ্গে অন্যান্য নিরাপত্তা ঝুঁকি তো রয়েছেই।’

তারা বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচার সরকার একক সিদ্ধান্তে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে। যার কারণে নিরাপত্তাসহ সামাজিক নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে আরও ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কথা শোনা যাচ্ছে। এতে করে সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে সকলেই আশঙ্কা করছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে আর কোন সমস্যা সৃষ্টি করা উচিত হবে না। ’

নেতৃদ্বয় বলেন, ‘আমরা আরেকটা গাজায় পরিণত হতে চাই না’  বাংলাদেশকে কোন যুদ্ধের মধ্যে জড়াতে চাই না। আমাদের দেশে এস কেউ সমস্যা সৃষ্টি করুক সেটিও আমাদের কাম্য হতে পারে না। একে তো আমাদের দেশ রোহিঙ্গা নিয়ে বড় সমস্যায় রয়েছে, তার ওপর প্যাসেজ দেওয়া নিয়ে যাতে সমস্যার সৃষ্টি না হয় এ জন্য সকলকে সচেতন হতে হবে। ‘মানবিক করিডোর’ পেতে শুধু বাংলাদেশের ওপর নির্ভর না করে প্রতিবেশী অন্য দেশেও চেষ্টা করা উচিত জাতিসংঘের।’

2 Attachments • Scanned by Gmail