ভোলায় নোমানী হত্যা ও ওয়াসেক হত্যাচেষ্টার ধরণ-পরিকল্পনা অভিন্ন

- Update Time : ১০:০৭:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৩৭ Time View
মোঃ আবুল কাশেম, জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক সরকার, ভোলা : অদ্য হতে প্রায় বায়ান্ন বছর আগে বাংলাদেশের ভোলা মহকুমার তজুমুদ্দিন থানার সোনাপুর ইউনিয়নের চাপরি গ্রামের লাহড়ি বাড়ির খুনী (মন্তাজ লাহাড়ি ওরফে মন্তু লাহড়ি)- গভীর রাতে সিঁদ কেটে সিঁদেল চোরের মত, শাহ মোহাম্মদ ওয়সেক চেয়ারম্যানের ঘরে শাহ মোহাম্মদ ওয়সেক চেয়ারম্যানকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রবেশ করে শাহ মোহাম্মদ ওয়সেক চেয়ারম্যানকে ধারালো দায়ের মত দেশীয় অস্র ছেনি- দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার মত- গত ০৬/০৯/২০২৫ ইং তারিখ শনিবার দিবাগত রাত নয়টার কিছুক্ষণ আগে ভোলায় ইসলামী ঐক্য আন্দেলনের নেতা, হেফাজতে ইসলামের ভোলা জেলা সেক্রেটারী, ভোলা জেলা ঈমাম সমিতির সহ-সভাপতি, বক্তৃতার দ্বারা রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দের পীর মাশায়েখদের কবর, ঘর-বাড়ি ও কবরের লাশ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঈমানী জোশ্ তৈরির সক্ষম তুখোর তৌহিদীবাদী ইসলামী বক্তা, আমিনুল হক নোমানী হুজুরকে কে বা কারা কুপিয়ে হত্য করেছে। গত ০৮/০৯/২০২০২৫ ইং রোজ সোমবার দুপুরে- ভোলা শহরের হাটখোলা এলাকায় ভোলায় ইসলামী ঐক্য আন্দেলনের নেতা আমিনুল হক হত্যার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ–সমাবেশ হয়েছে। ভোলার ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হতে সরকারকে ও পুলিশ প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম প্রদান করেছে।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আমিনুল ইসলাম হক (নোমানী হুজুর) হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার দাবিতে সোমবার বিক্ষোভ–সমাবেশে স্থানীয় ইসলামী তৌহিদী বাসিন্দারাও যোগ দিয়েছে। তৌহিদি জনতার ব্যানারে এ কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।ভোলার সদরের হাটখোলা জামে মসজিদ চত্বরে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে এ বিক্ষোভ–সমাবেশ হয়। এতে সাধারণ জনতার পাশাপাশি ক্লাস বর্জন করে অংশ নেন সদর উপজেলার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও। তাঁরা কালো ব্যাজ ধারণ করে। সমাবেশ শেষে বক্তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে ভোলায় হরতাল, অবরোধ, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয় ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন। গত শনিবার সাড়ে নয়টার দিকে বাসায় ফেরেন আমিনুল ইসলাম। ধারণা করা হয়েছে যে, বাসায় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাঁকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ভোলা জেলা সদরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আমিনুল ইসলাম জাতীয় ইমাম সমিতির ভোলা জেলা শাখার সহ-সভাপতি ও ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার সানি মুহাদ্দিস ছিলেন।
ঘটনার সময় বাসায় পরিবারের সদস্যরা ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান তজুমদ্দিন উপজেলায় শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এ ঘটনায় রোববার একটি হত্যা মামলা করেছেন আমিনুল ইসলামের স্ত্রী। তবে এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ভোলায় ঘরে ঢুকে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা জেলা প্রশাসনের তদন্ত শাখা মনোনিবেষী রয়েছে। আমিনুল ইসলামকে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দাবিতে ডাকা বিক্ষোভ–সমাবেশ কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্কুল–কলেজ–মাদ্রাসা থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের হাটখোলা জামে মসজিদ চত্বরে এসে জমায়েত হন। ভোলা জেলার সর্বস্তরের তৌহিদি জনতার আহ্বায়ক মাওলানা মোবাশ্বিরুল হক (নাঈম) এর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিভিন্ন ইসলামিক রাজনৈতিক দলের নেতারা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে না পারায় পুলিশের কড়া সমালোচনা করেন। সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা নজরুল ইসলাম, সদর উপজেলা আমির মাওলানা কামাল হোসাইন, পৌরসভার আমির মাওলানা জামাল উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা জেলার (উত্তর) সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান ওরফে মোমতাজী, সহ-সভাপতি মাওলানা ওবায়েদ বিন মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, জেলা হেফাজত ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান আজাদী, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক মাকছুদুর রহমান, ভোলা জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা মীর বেলায়েত হোসেন, জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান মিজানুর রহমান প্রমুখ। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে তাঁরা ভোলায় হরতাল, অবরোধ, ডিসি-এসপি কার্যালয় ঘেরাওসহ বক্তারা কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ডিসি ও এসপির বদলি দাবি করেন। কয়েক মাস ধরে ভোলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলেও দাবি করেন বক্তারা।বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সেয়ান সরকার বলেন, জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আমিনুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুতই আসামি গ্রেপ্তার হবে। একই তথ্য জানান ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু শাহাদাত মো. হাচনাইন পারভেজ। তিনি বলেন, নিহত আমিনুল হকের স্ত্রী হালিমা বিনতে কামাল বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। ভোলা জেলার খুন-ধর্ষণ ও খারাপির তান্ডবতা কমানোর জন্য খুনী মন্তাজ লাহড়ি সহ সকল লাহড়ি প্রজন্ম এবং লাহড়ি গ্যাং প্রজন্ম ধ্বংস করার প্রয়োজন রয়েছে। ছবিতে- মৃত:,হসপিটালাইজ্ড ও ইহকালের নোমানী হুজুর এবং হত্যার প্রতিবাদে মিছিল ও ভোলা সরকারি স্কুলের সমাবেশ।