০৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল আদায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার সচেতন সমাজ: অংশীজন সভায় তীব্র প্রতিবাদ- জেলা প্রশাসকের ইতিবাচক সাঁড়া

Reporter Name
- Update Time : ১১:০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
- / ১৫৪ Time View

আনিছুর রহমান , ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি চট্টগ্রামঃ চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলার সংযোগকারী তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল আদায় নিয়ে জনমনে ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের অংশীজন সভায় স্থানীয় সচেতন সমাজ টোলের বিরুদ্ধে তাদের জোরালো অবস্থান তুলে ধরেছেন। সভা থেকে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে এই সেতু থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে। অথচ, স্থানী ও পথচারীদের অভিযোগ, সরকারি নির্ধারিত হারের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টোল আদায় করা হয়েছিল, যা এক প্রকার “চাঁদাবাজি”র পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এমনকি অনেক সময় টোলের রশিদও দেওয়া হয়নি।চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক জনাবা ফরিদা খানমের পূর্বে ঘোষিত। ৩০শে জুলাই ২০২৫ ইং তারিখ সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অংশীজনি সভায় এমন মন্তব্য করেন।

এসময় সচেতন সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু থেকে এরই মধ্যে ৯০ কোটি টাকার বেশি টোল আদায় করা হয়েছে, যা নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় তিন গুণ। এরপরও টোল আদায় অব্যাহত রাখা অযৌক্তিক এবং অন্যায্য।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে গত সকাল জেলা প্রশাসকের সন্মেলন কক্ষে অংশীজনি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুজ্জামান চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন, বাঁশখালী গুনাগরি ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি, মোহাম্মদ আলী, জলদি মিয়ার বাজার ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ হামেদ,
এ্যাডভোকেট আরিফুল হক তায়েফ,
সাঙ্গু নদীর উপর নির্মিত সেতুটির টোল স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবী জানান বাঁশখালী বিভিন্ন পেশাজীবির সচেতন নাগরিক নিজ নিজ বক্তব্য প্রদান করেন।
বক্তারা বৈষম্য মূলক আচরণ হচ্ছে জানিয়ে স্থানীয়রা জানান সাঙ্গু নদীর ওপর আরও ছয়টি সেতু থাকলেও শুধু তৈলারদ্বীপ সেতুতেই কেন টোল আদায় করা হবে? এমনকি কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত শাহ আমানত সেতু, যা অনেক বড়, তার চেয়েও তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল বেশি নেওয়া হয়েছিল।
এটিকে বাঁশখালী এবং কক্সবাজার জেলার উত্তর, পূর্ব, পশ্চিমের মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দীর্ঘ ১৮ বছর সেতুটিতে টোল আদায় করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব দেখা দিয়েছিল। উল্লেখযোগ্য মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণ চোখে পড়ে না বলে ও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, টোলের অর্থ সেতুর উন্নয়নে ব্যবহার না হয়ে ইজারাদারের পকেটে যাচ্ছে।ব্যবসায়ী আইনজীবী সমাজ কর্মী এবং সাধারণ মানুষ বলছেন, এই অতিরিক্ত টোল বাঁশখালীর অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এটি শিল্পায়ন এবং বাণিজ্যের পথে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।বিভিন্ন সময আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল বাতিলের দাবিতে বাঁশখালী ও আনোয়ারার সচেতন সমাজ বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, গণস্বাক্ষর এবং স্মারকলিপি প্রদান করে আসছে।
বিগত সময়ে অনেক সিনিয়র রাজনৈতিবিদ টোল বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু সেসব প্রতিশ্রুতি কথা আর খবর কাগজ এবং সময়ে মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, বাস্তবে দেখা যায়নি চোখে পড়ার মত।জুলাই আগস্ট( ২০২৪ ইং) তারিখে গণঅভ্যুত্থান ছাত্র জনতার আন্দোলন আওয়ামীলীগ সরকারে পতন। অতঃপর বাঁশখালী ছাত্রজনতার ঐক্যের প্রতিবাদী আন্দোলনে পিছু হটে টোল আদায়কারি।বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ সম্মিলিতভাবে এই টোলের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
এমনকি এই বিষয়ে উচ্চ আদালতেও রিট করা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসকের কাছেও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে পুনরায় টোল আদায়ের নির্দেশনা আসায় জনমনে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন সমাজ এই নির্দেশনা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের প্রধান দাবি, তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল আদায় স্থায়ীভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। টোল আদায় বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এসময় অংশীজনি সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন
স্থানীয় সচেতন নাগরিক মো:নিজাম উদ্দিন, ঐতিহাসিক বিগ ভলিউম বাঁশখালী সম্পাদক গোলাম ছরওয়ার চৌধুরী, সাংবাদিক প্রতিনিধি মিজান বিন তাহের, বাস মালিক সমিতি প্রতিনিধি মো: নাজিম উদ্দীন ও ছাত্র সমন্বয়ক প্রতিনিধি ইমরানুল কাদের চৌধুরী জিসান প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক জনাবা ফরিদা খানম সচেতন নাগরিক সমাজের
বক্তব্য গুরুত্ব সহকারে শুনে অনুধাবন করে স্থায়ীভাবে টোল আদায় বন্ধ করার জন্য ইতিবাচক সাঁড়া দেন।
Tag :