১০:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
অন্ধকারের ছায়া, যখন সিংহাসন নীরব

Reporter Name
- Update Time : ০২:৩৪:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১২ Time View

আনিছুর রহমান
নিজস্ব (প্রতিবেদক)চট্টগ্রাম: একসময় এই রাজ্য ছিল সবুজে ভরা, যেখানে প্রতিটি গাছের পাতায় ছিল স্বাধীনতার গান। প্রজারা ছিল প্রাণবন্ত, আর শাসক ছিলেন তাদের হৃদয়ের প্রতিধ্বনি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সবুজ মলিন হতে শুরু করে। যেন সিংহাসনের প্রতিটি সিঁড়ি সোনার প্রলোভনে ভারী হয়ে উঠেছে, আর সেই ভারে চাপা পড়েছে প্রজা এবং শাসকের মধ্যেকার সেতু।
যখন একসময় নেতারা ছিলেন প্রজ্ঞার প্রতীক, এখন তাদের চোখ যেন শুধু গহনার ঔজ্জ্বল্যে ঝলসে যায়। প্রলোভনের কালো মেঘ ঢেকে দেয় তাদের বিচারবুদ্ধি, আর সেই মেঘের আড়ালে হারিয়ে যায় মানুষের কল্যাণ। তারা ভুলে যায়, সিংহাসন শুধু ক্ষমতার প্রতীক নয়, বরং এটি একটি পবিত্র দায়িত্ব, যা জনগণের বিশ্বাস আর ভালোবাসার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়।
অন্যদিকে, প্রজারাও যেন এক অদ্ভুত নীরবতায় আচ্ছন্ন। যখন অন্যায় আর অবিচার তাদের দরজায় কড়া নাড়ে, তারা চোখ বন্ধ করে থাকে। তারা ভেবে নেয়, নীরবতা হয়তো তাদের রক্ষা করবে, কিন্তু ইতিহাস প্রমাণ করে, নীরবতা কেবল বিশ্বাসঘাতকদেরই শক্তিশালী করে তোলে। যখন সত্য কথা বলার সাহস থাকে না, তখন মিথ্যার রাজত্ব বিস্তার লাভ করে।
এভাবেই, যখন শাসক আর প্রজার দূরত্ব বাড়ে, যখন নেতারা শুধু নিজেদের পকেটের দিকে তাকায়, আর প্রজারা তাদের কণ্ঠস্বর হারিয়ে ফেলে, তখন এক নতুন ইতিহাস লেখা হয়। এই ইতিহাস বীরত্ব, প্রেম বা ত্যাগের নয়; এটি বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস। এই ইতিহাস সেইসব নামহীন নায়কদের, যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করেছিল, আর সেইসব নির্বাক মানুষের, যারা এই পতনকে নীরবে দেখেছিল।

তবে এখনও সব আশা শেষ হয়ে যায়নি। এই অন্ধকার ছাপিয়ে যদি কোনো প্রজারা মাথা তুলে দাঁড়ায়, যদি তাদের কণ্ঠস্বর আবার গর্জে ওঠে, আর যদি শাসকের হৃদয়ে সামান্য হলেও আলোর রেখা থাকে, তাহলে হয়তো এই বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস আবারও বদলে যেতে পারে। হয়তো আবার ফিরে আসবে সেই সবুজ, যেখানে শাসক ও প্রজা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বপ্নের বাগান তৈরি করবে।
Tag :
https://shorturl.fm/rMry6